বাফুফের ‘সংস্কার’ কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ, নেই অগ্রগতি
প্রকাশিত:
৩০ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:৪৭
আপডেট:
৩০ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:৪৯

গত ২৬ অক্টোবর বাফুফে নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পরপরই তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তাবিথ আউয়াল গঠনতন্ত্র সংস্কার করার কথা বলেছিলেন। সেই আলোকে ৯ নভেম্বর প্রথম কার্যনিবাহী কমিটির সভায় তিন সদস্যের তিন মাস মেয়াদের একটি গঠনতন্ত্র সংস্কার কমিটি গঠনও হয়েছিল। সেই কমিটির আনুষ্ঠানিক মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হলেও একটি আনুষ্ঠানিক সভা ছাড়া কার্যত অন্য কোনো পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।
বাফুফের দুই মাস পর দেশের আরেক শীর্ষ ক্রীড়া সংস্থা বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন গঠনতন্ত্র সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিল। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সাবেক সচিব আখতার হোসেন খানের নেতৃত্বে বিওএ গঠনতন্ত্র যুগোপযোগী কমিটি ইতোমধ্যে তাদের রিপোর্ট পেশ করেছে। অথচ বাফুফের গঠনতন্ত্র সংস্কারের হোলদোল সেভাবে নেই।
বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার সংস্কার কমিটির কর্মকাণ্ডের ধীরগতির জন্য ফিফার নির্দেশনার দিকে বল ঠেললেন, ‘ফিফা-এএফসি’র সঙ্গে আমাদের গঠনতন্ত্র সংস্কার কমিটির সভা হয়েছিল। গঠনতন্ত্র সংস্কারের লক্ষ্যে ফিফা একটি নির্দেশনা দেবে সেটা অনুসরণ করে আমরা অগ্রসর হবো। সেই নির্দেশনা এখনো আসেনি।’
গঠনতন্ত্র সংস্কার কমিটির প্রথম সভা হয়েছিল ৪ ডিসেম্বর। সেই সভার চার মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো নাকি ফিফা এই সংক্রান্ত কোনো গাইডলাইন দেয়নি। বাফুফেকে অইেশ বিষয়ে ফিফাকে তাগাদা দেয় এই সংক্রান্ত বিষয়ে তাদের তৎপরতা বা উৎসাহও খানিকটা কম পরিলক্ষিত হচ্ছে।
কাজী সালাউদ্দিনের গত মেয়াদে বাফুফে ফলাও করে জানিয়েছিল, ‘ফিফা কাউন্সিলর সংখ্যা ও নির্বাহী কমিটির আকার কমানোর নির্দেশনা দিয়েছে।' এরপর বাফুফে তৎকালীন সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে নিয়ে একটি গঠনতন্ত্র সংস্কার কমিটি করে সেটা আর কোনো আলোর মুখ দেখেনি।
বছর চারেক আগে ফিফা যদি কাউন্সিলর ও নির্বাহী কমিটি উভয়ের আকার কমানোর নির্দেশনা দিয়েই থাকে তাহলে আবার পুনরায় কেন ফিফার নির্দেশনার অপেক্ষায় ফেডারেশন? এই প্রশ্নের উত্তরে সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নতুন কমিটি গঠনতন্ত্র নিয়ে নতুনভাবে কাজ করছে।’
৪ ডিসেম্বর গঠনতন্ত্র সংস্কার কমিটির প্রথম সভার পরের দিন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মোঃ আমিনুল ইসলাম, এনডিসি বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালকে চিঠি দিয়েছিলেন। বাফুফের গঠনতন্ত্র উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ফিফার গাইডলাইন অনুসরণ করেই মতামত দিতে চেয়েছিল।
চার মাস পেরিয়ে গেলেও বাফুফে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মতামত জানতে চায়নি এমনকি আনুষ্ঠানিকতাস্বরুপ চিঠিরও উত্তর দেয়নি বলে জানা গেছে। ২০০৮ সালের বাফুফে জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা থেকে পৃথক হয়ে জেলা-বিভাগীয় ফুটবল এসোসিয়েশন করে। বাফুফে কর্তারা সরকারের প্রভাবমুক্ত হয়ে ফুটবল পরিচালনার কথা বললেও আদতে এটি ফেডারেশনের প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের নির্বাচনে ভোট ব্যাংক হিসেবে পরিণত হয়েছে। ফুটবলাঙ্গনে প্রচলিত ধারণা, বাফুফে কর্তারা তাদের প্রয়োজন মতো ফিফা-এএফসিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. মো জকোরিয়াকে প্রধান করে বাফুফে তিন সদস্যের একটি কমিটি করেছিল। কমিটির মেয়াদ তিন মাস ইতোমধ্যে অতিবাহিত হলেও সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন এই কমিটিই গঠনতন্ত্র নিয়ে কাজ করছে। যদিও কোনো নির্বাহী সভায় এই কমিটির মেয়াদ বর্ধিতকরণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা যায়নি।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: