এবার এশিয়া কাপে বৃত্ত ভাঙবে বাংলাদেশের?
প্রকাশিত:
৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:১৩
আপডেট:
৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:৩১

টি-টোয়েন্টি মানেই যেন বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের জুজু। তবে সময় বদলেছে। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের বিচারে এবারকার এশিয়া কাপ বাংলাদেশের জন্য হতে পারে এক নতুন ইতিহাসের সূচনা।
সাম্প্রতিক তিনটি টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ হোম ও অ্যাওয়ে। দুই কন্ডিশনেই জিতেছে সব ম্যাচ। ধারাবাহিক এই সাফল্যে দলটির আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। শুধু আত্মবিশ্বাস নয়, পারফরম্যান্সের দিক থেকেও এই মুহূর্তে বাংলাদেশ বেশ শক্তিশালী একটি দল।
এই টুর্নামেন্টের আগের ১৬ আসরের মধ্যে বাংলাদেশের সাফল্য বলতে তিনবার ফাইনালে অংশ নেওয়া। তবে ২০১৮ সালের পর সেটাও আর হয়নি। এবার এই বৃত্ত ভাঙার চ্যালেঞ্জের সামনে ক্রিকেট বিশ্লেষকদের অনেকেরই সমর্থন পাচ্ছে না বাংলাদেশ দল।
এমনকি আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কাকে টপকে লিটনরা সুপার ফোরে যেতে পারবেন বলেও মনে করছেন না রাসেল আর্নল্ড, আকাশ চোপড়া, হার্শ ভোগলের মতো ক্রিকেটবোদ্ধারা। তার ওপর অনেকটা তারুণ্যনির্ভর দল নিয়েই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে গেছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ ২০২৩ এশিয়া কাপে খেলা সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমের মতো অভিজ্ঞ দুই ক্রিকেটারও এবার নেই।
তবে বর্তমানে বাংলাদেশের টপ অর্ডার রয়েছে দারুণ ফর্মে। দুই ওপেনার এবং তিন নম্বর ব্যাটার নিয়মিত পারফর্ম করছেন, যা ম্যাচের শুরুতেই দলকে এগিয়ে রাখছে। তাদের ফর্ম দলের জন্য বড় আশা জাগাচ্ছে।
এক সময় ছক্কা মারায় দুর্বল ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ২০২৫ সালে প্রতি ইনিংসে ৭.৭৩ হারে ছক্কা হাঁকিয়েছে দলটি, যেখানে ২০২৪ সালে ছিল মাত্র ৫.০৮। পাওয়ার হিটিংয়ের মানসিকতায় এসেছে বড় পরিবর্তন, যা জয়ের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
নিম্ন মাঝের ব্যাটিংয়ে এখন শামিম হোসেন ও জাকের আলী অনিকের মতো পাওয়ার হিটাররা রয়েছেন। এ ছাড়া দলে রয়েছেন একাধিক পেস বোলিং অলরাউন্ডার। যারা ব্যাট হাতেও দিতে পারেন কার্যকর ভূমিকা। ফলে ব্যাটিং লাইনআপ এখন আরও লম্বা ও ভারসাম্যপূর্ণ।
স্পিন আক্রমণে রয়েছে অফ স্পিনার শেখ মেহেদী, বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ ও লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। পেস আক্রমণেও রয়েছে ডানহাতি-বাঁহাতির সমন্বয়। মুস্তাফিজুর রহমানের অভিজ্ঞতা ও কাটারে ভর করে গড়া এই আক্রমণ প্রতিপক্ষের জন্য হুমকি হতে পারে।
সবকিছুর মাঝেও কিছু ঘাটতি ভাবিয়ে তুলছে টিম ম্যানেজমেন্টকে। পেস আক্রমণ এখনও অনেকটাই মুস্তাফিজ নির্ভর। তিনি না থাকলে বোলিং আক্রমণ কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে।
মিডল অর্ডারেও রয়েছে অস্পষ্টতা। বিশেষ করে চার নম্বর পজিশনে তাওহীদ হৃদয়ের পারফরম্যান্স আশানুরূপ নয়। তার স্ট্রাইক রেট দলের মধ্যে সবচেয়ে কম। বিকল্প হিসেবে সাইফ হাসান ও নুরুল হাসান সোহানকে বিবেচনা করা হলেও, তারাও পূর্ণাঙ্গ সমাধান নন।
এ ছাড়া মিডল অর্ডারের ব্যাটাররা অনেক সময় থিতু হতে বেশি সময় নিয়ে ফেলেন, যা চাপের মুহূর্তে দলের গতি কমিয়ে দেয়। এই কারণেই বাংলাদেশ এখনও নিয়মিত ২০০-২২০ রানের ইনিংস খেলতে পারছে না।
সবমিলিয়ে শক্তি ও দুর্বলতা- দুই মিলিয়ে বাংলাদেশ এমন এক অবস্থানে রয়েছে, যেখানে সবই সম্ভব। যদি দল নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে পারে, তাহলে সুপার ফোরে জায়গা পাওয়াটা হওয়া উচিত ন্যূনতম লক্ষ্য। এমনকি ফাইনালেও পা রাখতে পারে লিটন দাসের দল। তবে ছন্দ হারালে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়ও হতে পারে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: