শুক্রবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৫, ১১ই বৈশাখ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


আফিফ-মিরাজের লড়াইয়ের পর ১৯৪ রানে থামলো বাংলাদেশ


প্রকাশিত:
২১ মার্চ ২০২২ ০৪:০২

আপডেট:
২৫ এপ্রিল ২০২৫ ০৩:৪৮

 ছবি : সংগৃহীত

দক্ষিণ আফ্রিকান পেসারদের সামনে ওপরের সারির ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে শেষ দিকে হাল ধরলেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। দলীয় একশর আগে ৬ উইকেট হারালেও, এ দুই তরুণের ব্যাটে ভর করে ৯ উইকেটে ১৯৪ রানের বলার মতো সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে বাংলাদেশ।

প্রথম ম্যাচ হারায় সিরিজে নিজেদের আশা বাঁচিয়ে রাখতে জয়ের বিকল্প নেই স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে। সেই মিশনে বল হাতে দলকে এগিয়ে দিলেন ডানহাতি পেসার কাগিসো রাবাদা। তিনি একাই ধসিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ, মাত্র ৩৯ রান খরচায় নিয়েছেন ৫ উইকেট।

জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্সে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে পাওয়ার প্লে'র দশ ওভারে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন বাংলাদেশের প্রথম তিন ব্যাটার তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস। পরে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি মিডলঅর্ডারের দুই ব্যাটার ইয়াসির আলি রাব্বি এবং মুশফিকুর রহিম। কাগিসো রাবাদা একাই নেন ৩ উইকেট।

হঠাৎ লাফিয়ে ওঠা ডেলিভারিতে পরাস্ত হয়েছেন তামিম ও সাকিব। লুঙ্গি এনগিডির বলে তার গ্লাভসে লেগে বল চলে যায় কেশভ মহারাজের হাতে। টাইগার অধিনায়ক ৪ বল খেলে করেছেন ১ রান। পরে রাবাদার একই ধরনের ডেলিভারিতে ফ্লিক করে গিয়ে বাইরের কানায় লেগে সাজঘরে ফেরেন রানের খাতা খুলতে না পারা সাকিব।

শুরু থেকেই এ দুজনের চেয়ে তুলনামূলক সাবলীল ছিলেন লিটন। তিন চারের মারে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল তার ব্যাটে। কিন্তু বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি তিনি। রাবাদার ভেতরে ঢোকা বাউন্সারে ধরা পড়েন লিটন।

ইনিংসের অষ্টম ওভারের প্রথম বলটিই খানিক টেনে খাটো লেন্থে করেন রাবাদা। হালকা সুইং করে ভেতরে ঢুকছিল সেই ডেলিভারি। বলের লাইন থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টা করেও বাঁচতে পারেননি লিটন। বল তার ব্যাটের কানায় লেগে জমা পড়ে উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি ককের গ্লাভসে।

একই ওভারে সাজঘরে ফিরতে পারতেন পাঁচ নম্বরে নামা ইয়াসির আলি রাব্বিও। তবে স্লিপে দাঁড়িয়ে তার সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেন প্রথম স্লিপের ফিল্ডার জানেমান মালান। রাব্বি বেঁচে গেলেও, বাঁচেননি লিটন। তিনি আউট হওয়ার আগে ২১ বলে করেছেন ১৫ রান।

অবশ্য রাব্বিও বেশিক্ষণ বাঁচতে পারেননি। ইনিংসের ১২তম ওভারে টানা ষষ্ঠ ওভার করতে এসে শেষ বলে রাব্বিকে সাজঘরে পাঠান রাবাদা। আগের ম্যাচে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি পেলেও, আজ মাত্র ২ রান করতে পেরেছেন রাব্বি।

পরের ওভারে প্রায় পাঁচ বছর পর ওয়ানডে খেলতে নামা ওয়েইন পারনেলের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন উইকেটরক্ষক ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। তিনি ৩১ বল খেলে করতে পেরেছেন মাত্র ১২ রান।

এরপর উইকেটে এসে শুরু থেকেই পাল্টা আক্রমণের পথ বেছে নেন তরুণ বাঁহাতি ব্যাটার আফিফ। রাবাদার করা ১৪তম ওভারে তিন বলের ব্যবধানে জোড়া বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। যা খানিক স্বস্তির বাতাস বইয়ে দেয় বাংলাদেশ ডাগআউটে। পরে টেম্বা বাভুমার বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১৭ ওভারে দলের পঞ্চাশ পূরণ করে দেন আফিফ।

তরুণ সতীর্থের দেখাদেখি হাত খুলে খেলার চেষ্টা করেন মাহমুদউল্লাহও। প্রোটিয়া অধিনায়কের করা ২৩তম ওভারে জোড়া বাউন্ডারি হাঁকান তিনি। এক ওভার পর কেশভ মহারাজের বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে আফিফের সঙ্গে পঞ্চাশ রানের জুটি পূরণ করেন মাহমুদউল্লাহ।

কিন্তু তিনিও বেশিদূর যেতে পারেননি। দলীয় একশ হওয়ার আগে তাবরাইজ শামসির ফাঁদে পা দেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ। ইনিংসের ২৮তম ওভারে লেগ স্লিপ নিয়ে বোলিং শুরু করেন শামসি। প্রথম বলেই ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে সেই স্লিপে দাঁড়ানো জানেমান মালানের হাতে ধরা পড়েন মাহমুদউল্লাহ।

দলীয় ৯৪ রানের মাথায় আউট হওয়ার আগে তিন চারের মারে ৪৪ বলে ২৫ রান করেছেন তিনি। মাহমুদউল্লাহর বিদায়ে ভাঙে ৬০ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি। অভিজ্ঞ সতীর্থ ফিরে যাওয়ার পর উইকেটে এসে প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকান মেহেদি মিরাজ।

পরের ওভারে মহারাজের বলে ফের বাউন্ডারি তুলে নেন আফিফ। ঠিক পরের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান তিনি। জীবন পাওয়ার পর ইনিংসের ৩৬তম ওভারে লুঙ্গি এনগিডির বলে চার মেরে পৌঁছে যান ৪৮ রানে। পরের ওভারে মহারাজের বলে দৃষ্টিনন্দন শটে হাঁকান আরেক বাউন্ডারি।

অবশ্য সেই ওভারের প্রথম বলে এক রান নিয়েই পূরণ হয় আফিফের ফিফটি। পঞ্চাশে পৌঁছতে ৭৯ বল খেলেন তিনি। যেখানে ছিল ৭টি চারের মার। আফিফের ফিফটি পূরণে আগে মহারাজের করা ৩৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে স্লগ সুইপ করে ইনিংসের প্রথম ছক্কা মারেন মেহেদি মিরাজ।

তারা দুজনই সাজঘরে ফিরতে পারতেন প্রোটিয়া অধিনায়কের করা ৪১তম ওভারে। সেই ওভারের তৃতীয় বলে বড় শট খেলতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ তুলে দেন মিরাজ। কিন্তু তালুবন্দী করতে পারেননি জানেমান মালান। পরে শেষ বলে ঝাঁপিয়ে পড়েও ফিরতি ক্যাচ হাতে রাখতে পারেননি বাভুমা। উল্টো আঙুলে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়ে যান তিনি।

এরপর দেখেশুনে খেলতে থাকেন আফিফ ও মিরাজ। রাবাদার করা ৪৪তম ওভারে ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বাউন্ডারি পেয়ে যান আফিফ। মহারাজের করা পরের ওভারের প্রথম বলে স্লগ সুইপে বিশাল এক ছক্কা হাঁকান মিরাজ। সেই ওভারে আসে ১০ রান।

কিন্তু গড়বড় ঘটে যায় ৪৬তম ওভারে। রাবাদার করা সেই ওভারের প্রথম দুই বল ডট দেওয়ার পর স্লোয়ার ডেলিভারিতে ব্যাট চালিয়ে শর্ট মিডউইকেটে বাভুমার হাতে ধরা পড়েন আফিফ। তার ব্যাট থেকে আসে ৯ চারের মারে ১০৭ বলে ৭২ রানের ইনিংস।

এক বল পর স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হন মিরাজও। তিনি ড্রাইভ করতে গিয়ে ধরা পড়েন মিড অফে দাঁড়ানো মালানের হাতে। এই উইকেটের মাধ্যমে ৫ উইকেট পূরণ হয় রাবাদার। আউট হওয়ার আগে ১ চার ও ২ ছয়ের মারে ৪৯ বলে ৩৮ রান করে মেহেদি মিরাজ।

শেষ দিকে তাসকিন আহমেদ ৯*, শরিফুল ইসলাম ২ ও মোস্তাফিজুর রহমান ২* রান করলে ১৯৪ রানে থামে বাংলাদেশ। রাবাদার ৫ উইকেট ছাড়া একটি করে উইকেট নিয়েছেন লুঙ্গি, বাভুমা, তাবরাইজ ও পারনেল।

এসএন/তাজা/২০২২


সম্পর্কিত বিষয়:

দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশ দল

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top