ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে ‘আগামী সপ্তাহে’ বৈঠকে বসছেন ট্রাম্প-পুতিন
প্রকাশিত:
৭ আগস্ট ২০২৫ ১৯:৫৩
আপডেট:
৭ আগস্ট ২০২৫ ২২:৩৬

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রশিয়াকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া ‘আল্টিমেটাম’ শেষ হওয়ার মুহূর্তে ‘আগামী সপ্তাহে’ ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে বৈঠক হতে পারে। সেই সঙ্গে রাশিয়া থেকে তেল কেনা দেশগুলোকে লক্ষ্য করে ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্ক হুমকির মুখে ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক উত্তেজনা নতুন মাত্রা পাচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে পুতিন-ট্রাম্পের আসন্ন বৈঠকের খবর এলো।
রুশ প্রেসিডেন্টের দপ্তর জানিয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভ্লাদিমির পুতিন ‘আগামী দিনগুলোতে’ দেখা করতে সম্মত হয়েছেন।
ট্রাম্পও বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান নিয়ে আলোচনা করার জন্য ‘খুব শিগগিরই’ রাশিয়ান এবং ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করার একটি ‘ভাল সুযোগ’ রয়েছে। ইউক্রেনের ভলোদিমির জেলেনস্কি এই ধারণার প্রতি সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
ভ্লাদিমির পুতিনও বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বলেছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ট্রাম্পের সঙ্গে তার বৈঠক আয়োজন করতে পারে, সম্ভবত আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকে।
তিনি বলেন, তবে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক থেকে তিনি ‘অনেক দূরে’ আছেন, কারণ ‘শর্ত’ পূরণ করা হয়নি। ‘এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হতে এখনো অনেক পথ বাকি।’
ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার জন্য রাশিয়াকে ট্রাম্পের দেওয়া সময়সীমা শুক্রবার (৮ আগস্ট) শেষ হচ্ছে। এর মধ্যে গতকাল বুধবার মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফ মস্কোয় উড়ে যান এবং রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা করেন; এরপরই ট্রাম্প এবং পুতিনের মধ্যে বৈঠক হচ্ছে।
উইটকফ এর আগে চারবার মস্কো ভ্রমণ করেছেন। সেই সময়গুলোতে ট্রাম্পের কাছ থেকে আশাবাদ ব্যক্ত হলেও শেষ পর্যন্ত শান্তি আলোচনায় কোনো বড় অগ্রগতি হয়নি।
গত মাসে ট্রাম্প বিবিসির কাছে এক সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছেন, উইটকফের আগের চারটি সফরের পরে আলোচনায় প্রাথমিকভাবে আশাবাদ আসলেও পরে ‘পুতিন তাকে হতাশ করেছেন’।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট এখন আরও সতর্ক সুরে কথা বলছেন। বুধবার সাংবাদিকদের বলছেন, ‘আমি এটাকে কোনো অগ্রগতি বলছি না... আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই বিষয়ে কাজ করে আসছি। হাজার হাজার তরুণ মারা যাচ্ছে... আমি এখানে বিষয়টি শেষ করতে এসেছি।’
এদিকে, চাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ট্রাম্প রাশিয়ান তেল ক্রয়ের অব্যাহততার কারণে বুধবার ভারতীয় আমদানির ওপর ২৫% শুল্ক আরোপের একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। আগের ২৫% মিলিয়ে দেশটি মোট ৫০ শতাংশ শুল্কের মুখে পড়েছে।
জানুয়ারিতে ক্ষমতায় বসার আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ‘একদিনের মধ্যেই’ রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শেষ করতে সক্ষম হবেন। তবে সংঘাত আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে এবং মস্কোর প্রতি তার বক্তব্য আগের চেয়ে আরও কঠোর হয়ে উঠেছে।
যুদ্ধ শুরুর সাড়ে তিন বছর পর ইস্তাম্বুলে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে তিন দফা আলোচনাও দুই পক্ষকে যুদ্ধের সমাপ্তির কাছে আনতে ব্যর্থ করেছে। কেননা শান্তির জন্য মস্কোর দেওয়া ‘পূর্বশর্তগুলোকে’ কিয়েভ এবং তাদের পশ্চিমা মিত্ররা ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলেছে।
রাশিয়ার দাবির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ইউক্রেনকে একটি ‘পক্ষপাতহীন’ রাষ্ট্রে পরিণত করা এবং ন্যাটোতে যুক্ত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করা। দক্ষিণ-পূর্বে চারটি ‘আংশিক অধিকৃত’ অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় সামরিক প্রত্যাহারও চায়।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: