অবৈধ সম্পদের মামলা
যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী পাপিয়া ও স্বামী সুমনের ৪২ মাসের কারাদণ্ড
প্রকাশিত:
১৪ আগস্ট ২০২৫ ১৮:৫৭
আপডেট:
১৪ আগস্ট ২০২৫ ২১:৫৭

প্রায় ৬ কোটি ২৪ লাখ টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান সুমনের ৪২ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে দুজনের প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে, অনাদায়ে আরও ছয় মাস কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোহাম্মদ আবু তাহের এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে এসময় জামিনে থাকা পাপিয়া দম্পতি উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পরপরই বিচারক তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রায়ে বিচারক বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ নিঃসন্দেহে প্রমাণ করতে পেরেছে।
এর আগে রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষ তাদের যুক্তি উপস্থাপন সম্পন্ন করে এবং আদালত মামলার অভিযোগকারীসহ ২২ জন রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীর বক্তব্য রেকর্ড করে।
২০২০ সালের ৪ আগস্ট দুদক ঢাকার সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ পাপিয়া দম্পতির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ২২ ফ্রেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওয়েস্টিন হোটেলের ২৫টি রুমে অবস্থান করে রুম-নাইট, রেস্তোরাঁর খাবার, মদ, স্পা, লন্ড্রি, মিনি বার ফুড, মিনি বার বাবদ মোট তিন কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬১ টাকার বিল ক্যাশে পরিশোধ করেন পাপিয়া। ওয়েস্টিন হোটেলে থাকা অবস্থায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার শপিং করেন। যার কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি। দুদকের অনুসন্ধানে সর্বমোট ছয় কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদে তথ্যের কথা উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বাসাভাড়া বাবদ ৩০ লাখ টাকা, গাড়ির ব্যবসায় বিনিয়োগকৃত এক কোটি টাকা এবং নরসিংদীতে কেএমসি কার ওয়াশ সলিউশনে বিনিয়োগকৃত ২০ লাখ টাকা, বিভিন্ন ব্যাংকে তার এবং তার স্বামীর নামে জমাকৃত ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকারও কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি অনুসন্ধানে।
২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি র্যাবের একটি দল পাপিয়া, তার স্বামী সুমন ও তাদের ২ সহযোগীকে দেশত্যাগের চেষ্টা করার সময় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে।
পরে অভিযান চালিয়ে তাদের কাছ থেকে ৭টি পাসপোর্ট, ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল নোট, ১১ হাজার ৪৮১ মার্কিন ডলার, ৪২০ শ্রীলঙ্কান রুপি, ৩০১ ভারতীয় রুপি ও দুটি ডেবিট কার্ড উদ্ধার করে।
৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাচারের অভিযোগে চলতি বছরের ২৫ মে পাপিয়াকে চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগে দায়ের করা আরেকটি মামলায় ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর এই দম্পতির ২০ বছরের কারাদণ্ড হয়।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: