সোমবার, ৪ঠা আগস্ট ২০২৫, ২০শে শ্রাবণ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


বিড়ালের আঁচড়ে কি হতে পারে জানেন?


প্রকাশিত:
৪ আগস্ট ২০২৫ ১০:৫২

আপডেট:
৪ আগস্ট ২০২৫ ১৩:২৭

ছবি ‍সংগৃহিত

বিড়াল অনেকের ঘরের আদরের সঙ্গী। ছোটদের কাছে তো প্রায় খেলনার মতোই। তাদের কোমল শরীর আর খুনসুটিতে মজে থাকেন অনেকেই। তবে, আপনি কি জানেন যে আপনার প্রিয় বিড়ালটির একটি সাধারণ আঁচড়ও হতে পারে এক মারাত্মক সংক্রমণের কারণ?

এই রোগের নাম ক্যাট স্ক্রাচ ডিসিস (সিএসডি)। এটি একটি জুনোটিক ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ, যা মানুষের মধ্যে বিড়ালের আঁচড়, কামড়, অথবা লালার মাধ্যমে ছড়াতে পারে।

ব্রোনেল্লা হেঁসেলে নামে একটি ব্যাকটেরিয়া এই রোগের জন্য দায়ী। সংক্রমিত বিড়ালের নখ বা দাঁতের মাধ্যমে এই ব্যাকটেরিয়া মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি সাধারণ ফ্লু-এর মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগটি অত্যন্ত জটিল ও বিপজ্জনক হতে পারে।

এই রোগের লক্ষণ
আঁচড়ের জায়গা ফুলে যাওয়া, আশেপাশের লিম্ফ নোড ফোলা, জ্বর, ক্লান্তি, মাথাব্যথা, বদহজম। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ক্যাট স্ক্র্যাচ ডিজিজের জটিল রূপ হতে পারে এনসেফালোপ্যাথি— যা একটি গুরুতর স্নায়বিক অবস্থা। এতে দেখা দিতে পারে মানসিক বিভ্রান্তি, তীব্র মাথাব্যথা, খিঁচুনি, স্মৃতিভ্রম, আচরণগত পরিবর্তন। এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা করাতে হবে।

রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ব্রোনেল্লা হেঁসেলে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি যাচাই করা হয়। সঙ্গে রোগীর ইতিহাস ও উপসর্গ বিবেচনা করে চিকিৎসক নিশ্চিত হন। সাধারণত মৃদু সংক্রমণ নিজে থেকেই সেরে যায়। তবে গুরুতর ক্ষেত্রে চিকিৎসক অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করেন। এনসেফালোপ্যাথি বা অন্য স্নায়বিক জটিলতা দেখা দিলে হাসপাতালে ভর্তি ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল ব্যক্তিদের জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা অত্যন্ত জরুরি।

সেকথা মাথায় রেখেই চিকিৎসকদের পরামর্শ, বিড়ালের সঙ্গে সাবধানে থাকা উচিত। বিশেষ করে বিড়ালছানা, কারণ তাদের থেকে ব্রোনেল্লা সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি থাকে। বিড়াল আঁচড় বা কামড় দিলে সঙ্গে সঙ্গে সাবান ও জল দিয়ে ধুয়ে নেওয়া উচিত। বিড়ালের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত। নিয়মিত পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ঘরে মাছি বা পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। কারণ এগুলো ব্যাকটেরিয়া ছড়াতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে আঁচড়ের কয়েক দিনের মধ্যেও জ্বর না কমা, আশপাশের লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া, মাথা ঘোরা বা মানসিক বিভ্রান্তি এবং খিঁচুনি বা আচরণগত পরিবর্তন দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। বিড়ালের মতো প্রিয় পোষা প্রাণী থেকে যে এমন একটি রোগ হতে পারে, তা অনেকেই জানেন না। তাই ক্যাট স্ক্র্যাচ ডিজেজ নিয়ে সচেতন হওয়াটা অত্যন্ত জরুরি। সঠিক পরিচর্যা, স্বাস্থ্যবিধি এবং দ্রুত পদক্ষেপই পারে আপনাকে এবং আপনার পরিবারকে এই রোগ থেকে বাঁচাতে।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top