সংকটে থাকা পাঁচটি শরিয়াভিত্তিক ব্যাংক একীভূত করে গঠিত সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক–এর গ্রাহকদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে জানিয়েছেন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। তিনি বলেন, এই ব্যাংকের মালিক সরকার এবং গ্রাহকদের আমানতের পূর্ণ নিরাপত্তা সরকারই দেবে।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের হলরুমে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের প্রথম বোর্ড সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরসহ ব্যাংকের বোর্ড সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
চেয়ারম্যান ড. আইয়ুব মিয়া বলেন, ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের মূলধন ৩৫ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের আর কোনো ব্যাংকের নেই। এরই মধ্যে সরকার মূলধন হিসেবে ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যাংকের হিসাবে স্থানান্তর করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের গ্রাহকদের কোনো ধরনের চিন্তার কারণ নেই। আমানতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব এবং সরকার সেটিই করবে।’
নতুন ব্যাংকের কার্যক্রম প্রসঙ্গে তিনি জানান, লাইসেন্স পাওয়ার পর এটি প্রথম বোর্ড সভা। ব্যাংকের লক্ষ্য যত দ্রুত সম্ভব পূর্ণাঙ্গ ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করা। বিশেষ করে এসএমই ও সিএসএমই খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
সভায় ব্যাংকের নতুন লোগো ও স্লোগান চূড়ান্ত করা হয়েছে জানিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে— ‘সম্মিলিত শক্তিতে সমৃদ্ধ আগামী’।
ড. আইয়ুব মিয়া আরও বলেন, ‘চলতি মাসের মধ্যেই আমানতকারীদের ইন্স্যুরেন্স ফান্ডের অর্থ পরিশোধ করা হবে। তবে পাঁচটি ব্যাংকের সফটওয়্যার ও আইটি সিস্টেম একীভূত করতে কিছুটা সময় প্রয়োজন হচ্ছে।’
তিনি জানান, বোর্ড সভায় গভর্নর দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যাংকের কার্যক্রম চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে গ্রাহকরা নিয়মিত লেনদেন করতে পারেন। একই সঙ্গে সৎ কর্মকর্তাদের নিয়ে শক্তিশালী ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা এবং অতীতে অনিয়ম ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত অসৎ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানানো হয়।
ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, ‘একীভূত পাঁচ ব্যাংকের কর্মচারীদের বেতন কাঠামো ভিন্ন ছিল। নতুন ব্যাংকের অধীনে সব কর্মকর্তার জন্য একটি ইউনিফাইড বেতন কাঠামো প্রণয়ন করা হবে।’
বৈঠকে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ সাতজন পরিচালক উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে তারা সচিবালয়ে অর্থসচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ব্যাংকটির সার্বিক অগ্রগতি তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: ৫ ব্যাংক একীভূতের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট
বোর্ড সভায় ডেপুটি গভর্নর ড. মো. কবির আহাম্মদ, বিআরডির দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম, ব্যাংক রেজল্যুশন ডিপার্টমেন্টের পরিচালক ও কর্মকর্তাসহ রেজল্যুশনের আওতাধীন পাঁচটি ব্যাংকের প্রশাসকরাও উপস্থিত ছিলেন।