বাড়ছে তীব্র তাপপ্রবাহ, করণীয় কী?
প্রকাশিত:
১২ মে ২০২৫ ১০:৪৫
আপডেট:
১২ মে ২০২৫ ১৮:০৭

০৯ মে ২০২৫ রাজশাহী ও চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। ঢাকাসহ প্রায় সব বিভাগেই চলছে মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাস বলছে, তাপপ্রবাহ কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। ২৬ এপ্রিল ২০২৫ বণিক বার্তার একটা প্রতিবেদনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে, পাঁচ দশকের ব্যবধানে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগের বিষয়।
আমরা যারা পরিবেশ নিয়ে একটু ভাবি, তাদের এটা ভাবায় এবং পরিত্রাণের পথ খুঁজে বেড়াতে হয়। পত্রিকায় উল্লেখ করা হয়েছে যে ১৯৭৬ সালে দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আমি তখন এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলাম। সেই হিসেবে কিছুটা মনে করতে পারছি যে, মাগুরা থেকে আমরা ভীষণ গরমের মধ্যেই দুই বেলা এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলাম। ভীষণ কষ্ট হয়েছিল!
তথ্যানুযায়ী দুই বছরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০২৪ সালের মতো ২০২৫ সালের এপ্রিলের শুরু থেকেই পারদ নামক বস্তুটি ঊর্ধ্বমুখী অবস্থান করছে। আমরা জানি মানুষের শরীরের সাধারণ তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা এর চেয়ে বেশি থাকলে আমাদের শুধু অস্বস্তি লাগে না বরং তাপপ্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
প্রাথমিকভাবে উচ্চতাপ ক্লান্তি এবং হিটস্ট্রোকের অন্যতম অনুষঙ্গ। পরোক্ষভাবেও কিছু রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এই অসুস্থতাগুলো মারাত্মক হতে পারে, বিশেষ করে বয়স্ক, ছোট শিশু এবং দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যাযুক্ত ব্যক্তিদের মতো দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য।
হিটস্ট্রোক বলতে আমরা কী বুঝি? হিটস্ট্রোক হলো শরীরের অতিরিক্ত গরমের কারণে সৃষ্ট অবস্থা। এটি সাধারণত উচ্চ তাপমাত্রার সংস্পর্শে থাকার কারণে অথবা উচ্চ তাপমাত্রায় দীর্ঘ সময় ধরে শারীরিক পরিশ্রমের কারণে ঘটে। তীব্র গরমে খেটে খাওয়া মানুষের জীবিকা নির্বাহ করতে অনেক কষ্ট হয়। শুধু মানুষ নয় অন্যান্য জীবের উপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। দেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ নিয়ে একটু আলোকপাত করতে চাই।
ঢাকা শহরকে দিয়েই আলোচনা শুরু করা যাক। ঢাকা শহরের রয়েছে ৪০০ বছরের গৌরবের ইতিহাস। আমি ৪০০ বছর আগের কথা বলছি না। আমি বলছি ১৯৭৯ সালের এপ্রিল মাসে ১ম বর্ষের ছাত্র হিসেবে আমার দেখা ঢাকা শহরের কথা। সময়ের বিবর্তনে সেই ঢাকা এখন অনেক বদলে গেছে। ম্যাক্রোট্রেন্ডস এর তথ্যানুসারে ১৯৭৯ সালে ঢাকার জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৩০ লাখ। আর এখন ২০২৫ সালে ঢাকা শহরের আনুমানিক জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ।
৪৬ বছরে মানুষ বেড়েছে ৮ গুণেরও বেশি। এই বিশাল জনসংখ্যার জন্য তৈরি করতে হয়েছে বহুতল আবাসিক ভবন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং অফিস-আদালত। ফলে আনুপাতিক হারে নষ্ট হয়েছে বাস্তুতন্ত্রের অনেক উন্মুক্ত স্থান, সবুজের আচ্ছাদন এবং স্থায়ী-অস্থায়ী জলাধার। যেটি পরিবেশকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছে এবং একই সাথে তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
পাশাপাশি এত লোকের চলাচলের জন্য পাল্লা দিয়ে বেড়েছে যন্ত্রচালিত যানবাহন। এই বিশাল সংখ্যক জনসংখ্যা থেকে নির্গত কার্বন-ডাই-অক্সাইড বায়ুমণ্ডলের পারদের তাপমাত্রাকে বাড়াতে প্রভাবিত করছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে সবুজায়নের একটি প্রত্যক্ষ নেতিবাচক আন্তক্রিয়ার ফলে বাতাসের কার্বন ডাই অক্সাইডের ঘনত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গ্রিনহাউজ গ্যাস হিসেবে ভূমিকা রাখার কারণে কার্বন ডাই অক্সাইড বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি গ্রিনহাউজের কাচের দেয়ালের মতো বায়ুমণ্ডলে তাপ আটকে রাখে, যা তাকে মহাকাশে ফিরে যেতে বাধা দেয়। মানুষের কার্যকলাপের কারণে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ঘনত্ব বৃদ্ধি এই প্রভাবকে তীব্রতর করছে এবং পৃথিবীকে উষ্ণ করে তুলছে।
প্যালিওক্লাইমেট রেকর্ডের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিকগুলোর মধ্যে একটি হলো কয়েক লাখ বছরের হিমবাহ চক্রের সময় তাপমাত্রা এবং বায়ুমণ্ডলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের ঘনত্বের মধ্যে দৃঢ় সঙ্গতি লক্ষ্য করা গেছে। যখন কার্বন-ডাই-অক্সাইডের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়, তখন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। যখন কার্বন-ডাই-অক্সাইডের ঘনত্ব কমে যায়, তখন তাপমাত্রা কমে যায়।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে কমছে সবুজ গাছপালা যারা বাতাসের কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে কমাতে প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য করত। এই দুই কারণে বাড়ছে বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ। যেটি বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখছে। এই দুই বাস্তবতার সাথে সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে এয়ার-কন্ডিশনিং ইউনিট যুক্ত যন্ত্রচালিত যানবাহন। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাসা-বাড়িতে এবং অফিস-আদালতেও যুক্ত হয়েছে এয়ার-কন্ডিশনিং ইউনিট। যেখান থেকে প্রতিনিয়ত নির্গত হচ্ছে গরম বাতাস। ফলে আগুনে ঘি ঢেলে দেওয়ার মত অবস্থা তৈরি হওয়ায় বায়ুমণ্ডলের পারদের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে মারাত্মকভাবে ভূমিকা রাখছে। এর ফল ভোগ করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষের।
ইদানীং তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে “তাপ দ্বীপ” বা “হিট আইল্যান্ড” নিয়ে কথা হচ্ছে। বিভিন্ন কারণে শহরাঞ্চলে তাপ দ্বীপ তৈরি হয়। শহুরে এলাকায় প্রাকৃতিক ভূদৃশ্য হ্রাস এবং সবুজ গাছপালা ও জলাশয় কমে যাওয়া তার মধ্যে অন্যতম কারণ। সবুজ গাছপালা এবং জলাশয় যথাক্রমে ছায়া প্রদান করে, উদ্ভিদের পাতা থেকে পানি প্রবাহিত করে এবং পৃষ্ঠতলের পানি বাষ্পীভূত করে বাতাসকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
শহুরে এলাকায় শক্ত, শুষ্ক পৃষ্ঠতল- যেমন ছাদ, পায়ে চলা পথ, রাস্তা, ভবন এবং পার্কিং লট-প্রাকৃতিক ভূদৃশ্যের তুলনায় কম ছায়া এবং আর্দ্রতা প্রদান করে এবং উচ্চ তাপমাত্রাকে ধনাত্মক ভাবে প্রভাবিত করে। নগর তাপ দ্বীপপুঞ্জ (Urban heat islands বা UHIs), যেখানে নগর এলাকাগুলো আশেপাশের গ্রামীণ এলাকার তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে উষ্ণ, শহর এবং তাদের বাসিন্দাদের জন্য ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। এই উচ্চ তাপমাত্রা বিভিন্ন নেতিবাচক প্রভাবের কারণ হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে বায়ু দূষণ এবং তাপ-সম্পর্কিত স্বাস্থ্য সমস্যা।
ঘন অবকাঠামো এবং সীমিত সবুজায়নের কারণে, শহরাঞ্চলগুলো প্রাকৃতিক ভূদৃশ্যের তুলনায় তাপ শোষণ এবং পুনঃনির্গত করার ক্ষমতা বেশি। ফলে শহরগুলোয় তাপমাত্রা বেশি থাকে, কখনো কখনো আশেপাশের অঞ্চলগুলো থেকে তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি ছাড়িয়ে যায়। শহরের ইট-পাথরের উন্মুক্ত এলাকা দিনের বেলায় অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়।
নগর তাপ দ্বীপের মতো উষ্ণ ক্ষুদ্র জলবায়ু বা hot microclimate তখনই তৈরি হয়, যখন নগর এলাকার কৃত্রিমভাবে তৈরি পৃষ্ঠতল প্রাকৃতিক ভূদৃশ্যের চেয়ে সূর্য থেকে বেশি তাপ শোষণ করে এবং পুনঃনির্গত করে। এর ফলে আশেপাশের এলাকার তুলনায় শহরগুলোয় তাপমাত্রা বেশি হয়।
মূলত ভবন, রাস্তাঘাট এবং অন্যান্য অবকাঠামো এই ঘটনার জন্য বেশি অবদান রাখে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অতিরিক্ত গরমের একটি কারণ হলো শহরগুলো ব্যবহৃত নির্মাণ সামগ্রী, যেমন আস্ফাল্ট বা কংক্রিট, যেটি দিনেরবেলায় তাপ শোষণ করার ক্ষমতা বেশি রাখে; অথবা প্রাকৃতিক স্থান হ্রাস, যা ছায়াযুক্ত এলাকা প্রদান করতে এবং পানি বাষ্পীভূত করে এলাকাগুলো ঠান্ডা করতে সহায়তা করতো।
মার্কিন পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা উল্লেখ করেছে যে সরু রাস্তা এবং উঁচু ভবন, যা বড় শহরগুলোয় এখন খুব সাধারণ ব্যাপার, তাদের মধ্যে আটকে থাকা বাতাসকে গরম করে বায়ু প্রবাহকে হ্রাস করে। যানবাহন, কারখানা এবং এয়ার কন্ডিশনার থেকে অবশিষ্ট তাপ দ্বারা এই প্রভাব আরও বৃদ্ধি পায়। এটি মোকাবিলার জন্য একটি বহুমুখী পদ্ধতির প্রয়োজন।
যার মধ্যে রয়েছে তাপ শোষণ কমানো, বায়ু সঞ্চালন বৃদ্ধি, অস্থায়ী জলাধার নির্মাণ এবং টেকসই সবুজায়ন বৃদ্ধির কৌশল। সেই লক্ষ্যে প্রতি ইঞ্চি উন্মুক্ত স্থানকে সবুজের আওতায় আনতে হবে। মনে রাখতে হবে গাছপালা বাস্তুতন্ত্রের ভিত্তি তৈরি করে, অগণিত জীবের জন্য বাসস্থান সরবরাহ করে, জীববৈচিত্র্যকে সমর্থন করে। জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনে সবুজ উদ্ভিদ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করে, গ্লোবাল ওয়ার্মিং কমাতে সাহায্য করে ইত্যাদি।
এককালে বাংলাদেশকে নদীমাতৃক দেশ বলা হতো। এখন সেটি মৃত নদীর দেশে পরিণত হয়ে গেছে। ঢাকা শহরকে ঘিরে যে নদীগুলো ছিল যেমন, বুড়িগঙ্গাকে বুড়ি বানিয়ে দেওয়া হয়েছে, শীতলক্ষ্যার লক্ষ্যকে লক্ষ্যভ্রষ্ট করা হয়েছে, তুরাগের রাগকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে এবং বহমান বালু নদী যেন বালুর চাপে সরু খালে পরিণত হয়েছে। অনেক ছোট-বড় খাল এবং জলাধারের অস্তিত্ব আর নেই।
যত বেশি গাছ তত বেশি বাষ্পীভবন। প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগিয়ে শহর এলাকায় বায়ুর তাপমাত্রা বৃদ্ধির ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফকে নিম্নমুখী রাখা সম্ভব হবে। বৃক্ষ এবং গাছপালা একটি তাপ প্রশমনের কৌশল হিসেবে সবচেয়ে বেশি উপযোগী যখন ভবনের আশেপাশে কৌশলগত স্থানে সেটি রোপণ করা হয়। পার্কিং স্থানে এবং রাস্তায় পায়ে হেঁটে চলার পথগুলো ছায়া প্রদানের জন্য ঘন পাতাওয়ালা গুল্ম জাতীয় গাছ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
গাড়িকে ঠান্ডা স্থানে রাখলে গাড়ি যেমন ঠান্ডা থাকবে তেমনই এসির ব্যবহার কম হবে। ফলে কিছুটা হলেও গাড়ি থেকে কম তাপ নির্গত হবে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, পশ্চিম দিকে চিরহরিৎ জাতীয় গাছ বা লতা জাতীয় গাছ লাগানো ভবনকে ঠান্ডা রাখার জন্য একটি কার্যকর পদ্ধতি। বিশেষ করে গাছগুলো জানালা এবং ভবনের ছাদের অংশে ছায়া দিয়ে বাসস্থানকে ঠান্ডা রাখে।
শহরাঞ্চলে তাপপ্রবাহের প্রভাব কমাতে বৃক্ষ এবং সবুজ প্রযুক্তির ব্যবহার এখন সময়ের দাবি। সেই বিবেচনায় ছায়া প্রদানকারী গাছ নির্বাচন করে দ্রুত সবুজায়ন করা, উন্মুক্ত সড়ক দ্বীপগুলোয় ঘন পাতার, গুল্ম জাতীয় গাছ লাগিয়ে সবুজায়ন করা, একইভাবে উন্মুক্ত স্থানগুলোয় কার্পেট ঘাস বা কার্পেট জাতীয় লতানো গাছ দিয়ে মাটিকে ঢেকে দিয়ে মাটিকে উত্তপ্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে বায়ুমণ্ডলকে শীতল রাখা। দালান কোঠার শহরের ফাঁকা স্থানগুলো গাছের আবরণের প্রভাব অনস্বীকার্য।
জরিপে বলা হয়েছে যে, ৩০ শতাংশ গাছের সবুজ আচ্ছাদন প্রায় ০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পারদের লেভেল কমিয়ে আনতে পারে। আগামী প্রজন্মের জন্য এখনই নগর পরিকল্পনাবিদদের সবুজ অবকাঠামোর কথা মাথায় রেখে পরিকল্পনা গ্রহণের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। শহরে সবুজায়নের ক্ষেত্রে স্থান, ভৌত পরিবেশ এবং জননিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনায় নিয়ে দেশীয় গাছ নির্বাচন করতে হবে। সেক্ষেত্রে গাছগুলো যেমন শোভাবর্ধন করবে, তেমনই সবুজ আচ্ছাদনের মাধ্যমে পরিবেশকে শীতল করবে। সেই বিবেচনায় রাস্তার পাশের গাছ হিসেবে নিম, অশোক, বকুল, অশ্বত্থ, সোনালু, জারুল, ছাতিম, ডুমুর জাতীয় গাছ রোপণের পরিকল্পনা নিতে হবে। এতে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা কমানোর সাথে সাথে দেশীয় জীববৈচিত্র্যকেও রক্ষা হবে।
পাশাপাশি মরা নদীকে বাঁচাতে নদী খেকোদের দ্রুত উচ্ছেদ করে ড্রেজিং-এর মাধ্যমে নদীর প্রাণ ফিরিয়ে দিতে হবে। প্রতিটি কাজের সাথে অবশ্যই জনসচেতনতা এবং জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। আর দেরি না করে আসুন, তাপমাত্রার বৃদ্ধির পারদের ঊর্ধ্বমুখী গতিকে নিম্নমুখী করতে দল-মত নির্বিশেষে আমরা সবাই মিলে আমাদের প্রিয় দেশমাতৃকাকে ভালোবেসে নদী বিধৌত সবুজ শ্যামলিমার দেশে পরিণত করি।
অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা ।। চেয়ারম্যান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: