শুক্রবার, ২২শে আগস্ট ২০২৫, ৬ই ভাদ্র ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


একাত্তরকে ভুলিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে : মির্জা ফখরুল


প্রকাশিত:
২১ আগস্ট ২০২৫ ২১:৪৭

আপডেট:
২২ আগস্ট ২০২৫ ০০:১৬

ছবি সংগৃহীত

দেশে ‘একাত্তরকে ভুলিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে’ অভিযোগ করে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বিকেলে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে আয়োজিত শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। বিএনপির উদ্যোগে জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের সম্মানে এ মতবিনিময় অনুষ্ঠান হয়।

তিনি বলেন, ‘‘আজকে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের কথা বার বার স্মরণ করতে চাই। এজন্য চাই যে, ১৯৭১ সাল আমাকে একটা স্বাধীন দেশ দিয়েছিল, ভূ-খণ্ড দিয়েছিল, আমাকে একটা স্বাধীন সত্ত্বা দিয়েছিল এবং সেজন্য আজকে আমার অস্তিত্ব আছে, আমি টিকে আছি। আমি স্মরণ করতে চাই ’২৪ জুলাই-আগস্টের শহীদদের কারণ তারা আমাদের একটা গণতন্ত্রের স্বপ্ন দেখার সুযোগ করে দিয়েছি।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “এই দুইটা জিনিসই আমাদের মাথায় রাখতে হবে। আজকে একটা প্রচ্ছন্ন প্রচেষ্টা আছে একাত্তরকে ভুলিয়ে দেওয়ার… এটার বিরুদ্ধে কিন্তু আমাদের সমস্ত বাংলাদেশের নাগরিককে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ২৪ এর জুলাই-আগস্ট যেভাবে সত্য, ঠিক একইভাবে সত্য কিন্তু একাত্তরের নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ। সেই মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন কে? শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা।”

তিনি আরও বলেন, ‘‘আজকে একটা নতুন করে কথা উঠছে, ষড়যন্ত্র চলছে যে বাংলাদেশে এক ধরনের উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এই উগ্রবাদকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেওয়া যাবে না। তাহলে বাংলাদেশের যে আত্মা, যে সোল সেই অস্তিত্ব আমরা রক্ষা করতে পারবো না। এই কথাটা আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি কথাটা আজকে এজন্য আরও বেশি করে বলছি, বিভক্তি বিভাজনের রাজনীতি কেউ করবেন না। অতীতে যা হয়েছে হয়েছে। এখন বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য, বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখার জন্য, বাংলাদেশের সামনে নেওয়ার জন্য, বাংলাদেশ আরও উন্নত করবার জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘বিগত ১৫ বছর যারা আমাদের ভুল বুঝিয়ে, আমাদের ভোট নিয়ে শাসন করেছেন, তারা আমাদের বন্ধু হিসেবে মনে করেননি। তারা মনে করেছেন প্রজা হিসেবে, আমাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করেছেন, আমাদের সমস্ত দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, আমি কয়েকদিন আগে চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে গিয়েছিলাম। ব্যাংককে গিয়ে আমি আমার বন্ধুদের কাছে শুনলাম, ওখানে এখন সবচাইতে অভিজাত এলাকা যেগুলো সেই অভিজাত এলাকায় বাড়ি ভাড়ার ধুম পড়ে গেছে। সেই বাড়িগুলো ভাড়া করছেন সমস্ত আওয়ামী লীগের বিতাড়িত নেতারা। তারা এক একটা যে গাড়ি কিনছেন ,সেই গাড়িগুলো কোনটাই আপনার ২ কোটি ৩ কোটি টাকার কমে নয়। এসব টাকা কোথায় থেকে গেল? এই দেশের সম্পদকে তারা পাচার করেছেন।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনারা সবাই জানেন এটা নতুন করে বলার কিছু নাই, বলতে চাই না। শুধু এইটুকু বলতে চাই, আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সমস্ত গণতান্ত্রিক যে কাঠামো সে কাঠামো ভেঙে ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ এদেশের সম্পদকে লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। প্রায় 88 লাখ কোটি টাকা তারা বিদেশে পাচার করেছে।”

বিএনপি শীর্ষ এই নেতা বলেন, আমাদের সম্পদ বলতে আর কিছু নেই, সব পাচার হয়ে গেছে। আমাকে একজন অর্থনীতিবিদ জিজ্ঞেস করছিলেন যে দেখে শুনে তো মনে হচ্ছে যে এর পরে তোমরাই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আসবে জনগণ তোমাদের ওপর আস্থা রাখবে। তো তোমরা দেশ চালাবে কোথায় থেকে? কারণ টাকা তো সব পাচার হয়ে গেছে, অর্থাৎ আমাদের দেশের অর্থনীতির অবস্থা কী করুণ করেছে সেই জিনিসটাই শুধু আমি আপনাদের বললাম।”

অসাম্প্রদায়িক একটি ‘রেইনবো রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠাই বিএনপি তথা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের লক্ষ্য। ‘আগামীর বাংলাদেশ’ গঠনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বানও জানান বিএনপি মহাসচিব।

বিএনপি ধর্ম বিষয়ক সহ-সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বিজন কান্তি সরকার, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ড, প্রান্তিক জনশক্তি উন্নয়ন বিষয়ক সহ-সম্পাদক অপর্ণা রায় দাস, নির্বাহী কমিটির সদস্য রনেশ দত্ত, দেবাশীষ রায় মধু, নিপুণ রায় চৌধুরী, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের তপন চন্দ্র মজুমদার, এসএন তরুণ দে, মিল্টন বৈদ্য, পূজা উদযাপন ফ্রন্টের জয়দেব জয়, হিন্দু মহাজোটের সুশান্ত চক্রবর্তী, ঢাকা মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জয়ন্ত দেব, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, ইনকনের প্রভু বিমলা প্রসাদ বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল বারী ড্যানি, জন গোমেজমহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top