বৃহঃস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ঠা আশ্বিন ১৪৩১


আল্লাহ কারো প্রতি সন্তুষ্ট হলে যে আলামত প্রকাশ পায়


প্রকাশিত:
৩১ জুলাই ২০২৪ ১৭:৪২

আপডেট:
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৭:৪৪

ছবি- সংগৃহীত

আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি সবচেয়ে বড় অর্জন। এজন্য আল্লাহর আদেশ নিষেধ মেনে চলতে হবে। তাঁকে ভালোবাসতে হবে, ভয়ও করতে হবে। নবীজির সুন্নত অনুযায়ী আমল করতে হবে। সুন্নতের খেলাফ যত আমলই করা হোক, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন সম্ভব নয়। তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলার ঘোষণা-‘বলুন, আমি কি তোমাদের সেসব লোকের সংবাদ দেব, যারা কর্মের দিক দিয়ে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত। তারা সেসব মানুষ, যাদের প্রচেষ্টা পার্থিব জীবনে পণ্ড হয়, অথচ তারা মনে করে যে তারা সৎকর্ম করেছে।’ (সুরা কাহাফ: ১০৩-১০৪)

আল্লাহর সন্তুষ্টিতে যা মেলে
১. আল্লাহ তাআলা কোনো বান্দার ওপর সন্তুষ্ট হলে তাকে ভালো কাজের সুযোগ দেন। যদি দেখেন যে, আপনার ভালো কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তখন বুঝতে হবে আল্লাহ আপনার ওপর সন্তুষ্ট। কারণ, এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, আল্লাহ তাআলা কারো প্রতি সন্তুষ্ট না হলে তাকে ভালো কাজের সুযোগ দেন না।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহ কাউকে সৎপথে পরিচালিত করতে চাইলে তিনি তার হৃদয়কে ইসলামের জন্য খুলে দেন, (আবার) যাকে তিনি বিপথগামী করতে চান, তার হৃদয়কে অতিশয় সংকীর্ণ করে দেন; তার কাছে ইসলাম অনুসরণ আকাশে আরোহণের মতো দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে।’ (সুরা আনআম: ১২৫)

আনাস (রা.) বলেন, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘আল্লাহ যদি তাঁর কোনো বান্দার কল্যাণ করার ইচ্ছা করেন তাহলে তাকে কাজ করার তাওফিক দেন। প্রশ্ন করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! তিনি কীভাবে তাকে কাজ করার তাওফিক দেন? তিনি বলেন, তিনি সেই বান্দাকে মৃত্যুর আগে সৎকাজের সুযোগ দান করেন।’ (তিরমিজি: ২১৪২)

২. আল্লাহর সন্তুষ্টির আরেক লক্ষণ হলো- নেক আমলের পাশাপাশি তাকওয়া (আল্লাহভীতি) বেড়ে যাবে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা সৎপথে চলবে, আল্লাহ তাআলা তাদের এ চলা আরো বাড়িয়ে দেন এবং তাদের মুত্তাকি হওয়ার শক্তি দান করেন’ (সুরা মুহাম্মদ: ১৭)। মূলত যারা আল্লাহর পথে চলতে চায় এবং চেষ্টা সাধনা দ্বীনের প্রতি লেগে থাকে, আল্লাহ তাদের ওপর সন্তুষ্ট। তিনি তাঁর পথে চলা তাদের জন্য সহজ করে দেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা আমার পথে প্রাণপণে চেষ্টা করে, আমি অবশ্যই তাদের আমার পথে পরিচালিত করি।’ (সুরা আনকাবুত: ৬৯)

৩. আল্লাহর সন্তুষ্টির আরেকটি লক্ষণ হলো- ভালো সঙ্গী, সহচর, বন্ধু, কর্মচারী, সহযোগী পাওয়া। বর্তমান সমাজের অনেক মানুষ এমন রয়েছে যাদের ভালো কাজের সদিচ্ছা রয়েছে, কিন্তু তাদের সহচররা তাদের মঙ্গল কামনা করে না। এটি আল্লাহর অসন্তুষ্টি কারণ। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেছেন, আল্লাহ কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের কল্যাণের ইচ্ছা করলে তার জন্য একজন সৎ মন্ত্রীর ব্যবস্থা করেন। রাষ্ট্রপ্রধান ভুল করলে সে তা স্মরণ করিয়ে দেয়। আর তার স্মরণ থাকলে মন্ত্রী তাকে সহযোগিতা করেন। আর আল্লাহ তার অকল্যাণ চাইলে একজন খারাপ লোককে তার মন্ত্রী নিযুক্ত করেন। সে (আল্লাহর নির্দেশ) ভুলে গেলে মন্ত্রী তাকে তা স্মরণ করিয়ে দেয় না, আর তার স্মরণ থাকলে সে তাকে সহযোগিতা করে না। (আবু দাউদ: ২৯৩২)

৪. এছাড়াও, যাকে আল্লাহ ভালোবাসেন তাকে মানুষের মনে জায়গা করে দেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (স.) বলেন, ‘আল্লাহ যখন কোনো বান্দাকে ভালোবাসেন তখন তিনি জিবরাঈল (আ.)-কে ডেকে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালোবাসেন, কাজেই তুমিও তাকে ভালোবাসো। তখন জিবরাঈল (আ.) তাকে ভালোবাসেন। অতঃপর জিবরাঈল (আ.) আকাশের অধিবাসীদের মধ্যে ঘোষণা করে দেন যে, আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালোবাসেন। কাজেই তোমরা তাকে ভালোবাসো। তখন আকাশের অধিবাসীরা তাকে ভালোবাসতে থাকে। অতঃপর পৃথিবীতেও তাকে সম্মানিত করার ব্যবস্থা করা হয়।’ (বুখারি: ৩২০৯)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে বেশি বেশি নেক আমল করার তাওফিক দান করুন এবং তাঁর পছন্দের বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করুন। আমিন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top