১০০ বার কালেমা তাইয়েবা পড়লে যা পাবেন
প্রকাশিত:
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:০১
আপডেট:
১২ মার্চ ২০২৫ ১০:৩৬

কালেমা তাইয়েবা হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, মুহাম্মদ (স.) আল্লাহর রাসুল। এই কালেমার দুটি অংশ। প্রথম অংশটি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ সুরা সাফফাতের ৩৫ নম্বর আয়াতে এবং দ্বিতীয় অংশ ‘মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ সুরা ফাতহের ২৯ নম্বর আয়াতে বিদ্যমান।
এই কালেমা সাধারণ কোনো বাক্য নয়। বরং এটি একটি অতীব মর্যাদাপূর্ণ কালেমা। বান্দার চূড়ান্ত সফলতা এই কালেমার ওপর নির্ভরশীল। এই কালেমায় বিশ্বাসীদের আল্লাহ তাআলা কবরের প্রশ্নোত্তর পর্বেও সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদেরকে সুদৃঢ় বাক্যের দ্বারা (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ দ্বারা) দুনিয়া ও আখেরাতে সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন।’ (সুরা ইবরাহিম: ২৭)
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় হাদিসে এসেছে, রাসুল (স.) বলেছেন, কবরে মুসলমান ব্যক্তিকে যখন প্রশ্ন করা হবে তখন সে সাক্ষ্য দেবে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’, আল্লাহর বাণীতে এর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।(বুখারি: ৪৩৪২)
কালেমা তাইয়েবার ওজন সাত জমিন ও সাত আসমানের চেয়েও ভারী। রাসুল (স.) ইরশাদ করেছেন, একবার মুসা (আ.) বলেন, হে আমার রব! আমাকে এমন একটি বাক্য বলে দিন যা দ্বারা আমি আপনার জিকির করতে পারি অথবা বলেছেন তার দ্বারা আপনার কাছে দোয়া করতে পারি। আল্লাহ বলেন, হে মুসা! তুমি বলবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। তখন মুসা (আ.) বলেন, হে আমার রব! আপনার সব বান্দা তো এটি বলে থাকে, আমি আপনার কাছে এমন কিছু চাচ্ছি যা খাস করে আমাকেই বলবেন। তখন আল্লাহ বললেন, হে মুসা! যদি সাত আসমান ও আমি ভিন্ন তার সমস্ত অধিবাসী এবং সাত জমিন এক পাল্লায় রাখা হয়, আর ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এক পাল্লায় রাখা হয়। তাহলে নিশ্চিত ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর পাল্লা ভারী হবে। (শরহুস সুন্নাহ: ১২৭৩; মুসতাদরাক হাকেম: ১৯৭২)
তাইয়েবা পড়ে ইন্তেকাল হলে মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে জান্নাত লাভ হবে। মুআজ ইবনে জাবাল (রা.) বলেন, রাসুল (স.) বলেছেন, যার শেষ কথা হবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুস্তাদরাক হাকেম: ১৮৭৮)
হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) ইরশাদ করেন, মেরাজের সময় আমি জান্নাতে প্রবেশের সময় দুই পাশে দেখি তিনটি লাইনে স্বর্ণাক্ষরে লেখা ১. লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ ২. আমরা যে ভালো কর্ম পেশ করেছি তা পেয়েছি, যা খেয়েছি তা থেকে উপকৃত হয়েছি, যা ছেড়ে এসেছি তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। ৩. উম্মত হলো গুনাহগার আর রব হলো ক্ষমাশীল। (জামেউস সগির: ৪১৮৬)
প্রতিদিন ১০০ বার কালেমা তাইয়েবা পড়লে তাকে হাশরের দিন বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হবে। হজরত আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন- مَا مِنْ عَبْدٍ يَقُولُ: لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ , مِائَةَ مَرَّةٍ إِلَّا بَعَثَهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَوَجْهُهُ كَالْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ ‘কোনো ব্যক্তি যদি “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ” একশত বার পাঠ করে, তাহলে কেয়ামতের দিন তার চেহারা পূর্ণিমা চাঁদের ন্যায় উজ্জ্বল করে উঠানো হবে।’ (কানজুল উম্মাল: ১৭৯; মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ১৬৮৩০; মুসনাদুশ শামিন: ৯৯৪; জামেউল মাসানিদ: ১২১১৯)
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে বেশি বেশি করে কালেমা তাইয়্যেবা পাঠ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: