সাহরিতে পানি খেয়ে রোজা রাখা যাবে?
প্রকাশিত:
৯ মার্চ ২০২৫ ১২:১৬
আপডেট:
১২ মার্চ ২০২৫ ১৭:২৩

ইসলামে সাহরি একটি মর্যাদাপূর্ণ শব্দ। রোজার উদ্দেশ্যে শেষরাতে ঊষা উদয়ের আগের পানাহারকে সাহরি বলা হয়। এই খাবারে বরকত রয়েছে। সাহরি খাওয়া সুন্নত। আল্লাহর রাসুল (স.) বলেছেন, ‘তোমরা সাহরি খাও, সাহরিতে বরকত রয়েছে।’ (মুসলিম: ২৪২০, বুখারি: ১৮০১)
অন্য হাদিসে নবীজি (স.) বলেছেন, ‘আমাদের রোজা ও আহলে কিতাবের রোজার মধ্যে পার্থক্য হলো সাহরি খাওয়া।’ (মুসলিম: ১০৯৬; আবু দাউদ: ২৩৪৩)
সাহরি খাবারের কোনো প্যাকেজ নয়। বিশেষ কোনো খাবারকে সাহরি বলা হয় না। বরং রোজার উদ্দেশ্যে ঊষা উদয়ের আগে হালাল যা খাবেন বা পান করবেন, তার নামই সাহরি। এক ঢোক পানি পান করলেও সাহরির সুন্নত আদায় হয়ে যায়।
রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘এক ঢোক পানি দিয়ে হলেও সাহরি করো। কারণ যারা সাহরি খায়, আল্লাহ তাআলা তাদের উপর রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা তাদের জন্য রহমতের দোয়া করেন।’ (মুসনাদে আহমদ: ৩/১২; মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ৯০১০; সহিহ ইবনে হিববান: ৩৪৭৬)
প্রিয়নবীজি সাধারণত খেজুর দিয়ে সাহরি করতেন। নবীজির অনুসরণে সেটিই উম্মতের জন্য উত্তম সাহরি। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী (স.) বলেন, ‘খেজুর কতই না উত্তম সাহরি!’ (আবু দাউদ: ২৩৪৫)
তবে, সুন্নত পালনের জন্য খেজুর খাওয়াও জরুরি নয়। অন্য যেকোনো কিছু খাওয়া যাবে। শুধু পানি খেয়ে সাহরি সম্পন্ন করলে সুন্নত আদায় হবে। যার দলিল উপরেই রয়েছে। যেখানে নবীজি বলেছেন, ‘এক ঢোক পানি দিয়ে হলেও সাহরি করো।’
অর্ধরাতের পর থেকে ফজরের আগ পর্যন্ত সাহরি খাওয়ার সময়। সুবহে সাদিকের কাছাকাছি সময়ে সাহরি খাওয়া মোস্তাহাব। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘সকল নবীকে সময় হওয়ার পরপরই (তাড়াতাড়ি) ইফতার করতে এবং শেষ সময়ে সাহরি খেতে আদেশ করা হয়েছে।’ (আলমুজামুল আওসাত: ২/৫২৬; মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ৩/৩৬৮)
রোজা সহিহ হওয়ার জন্য সাহরি খাওয়া আবশ্যক নয়, শর্তও নয়। তাই কেউ যদি ঘুমের কারণে ভোররাতে উঠতে না পারে এবং সাহরি না খেয়ে রোজা রাখে, তাহলেও তার রোজা হয়ে যাবে। তবে মনে রাখতে হবে- যেহেতু সাহরি খাওয়া সুন্নত ও বরকতময়, অন্তত শেষ সময়ে উঠে এক গ্লাস পানি খেয়ে হলেও সাহরি সম্পন্ন করা উত্তম। আল্লাহ তাআলা আমাদের সেই তাওফিক দান করুন। আমিন।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: