বুধবার, ১২ই মার্চ ২০২৫, ২৮শে ফাল্গুন ১৪৩১


রোজা ভেঙে ফেলা যাবে যেসব কারণে


প্রকাশিত:
১১ মার্চ ২০২৫ ১২:০১

আপডেট:
১২ মার্চ ২০২৫ ১৭:০৫

ছবি সংগৃহীত

পবিত্র কোরআনে রমজানের রোজা সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য সিয়াম ফরজ করা হলো, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যেন তোমরা মুত্তাকি হও। (সূরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)

রমজানের রোজা সম্পর্কে এক হাদিসে হজরত তালহা ইবনু উবায়দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত—

এলোমেলো চুলসহ একজন গ্রাম্য আরব রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলেন। তারপর বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাকে বলুন, আল্লাহ তায়ালা আমার উপর কত সালাত ফরজ করেছেন? তিনি বলেন, পাঁচ (ওয়াক্ত) সালাত; তবে তুমি যদি কিছু নফল আদায় কর তা স্বতন্ত্র কথা।

এরপর তিনি বললেন, বলুন, আমার উপর কত সিয়াম আল্লাহ তায়ালা ফরজ করেছেন? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, রমজান মাসের সাওম; তবে তুমি যদি কিছু নফল কর তবে তা স্বতন্ত্র কথা। এরপর তিনি বললেন, বলুন, আল্লাহ আমার উপর কী পরিমান জাকাত ফরজ করেছেন? রাবী বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে ইসলামের বিধান জানিয়ে দিলেন।

এরপর তিনি বললেন, ওই সত্তার কসম, যিনি আপনাকে সত্য দিয়ে সম্মানিত করেছেন, আল্লাহ আমার উপর যা ফরজ করেছেন, আমি এর মাঝে কিছু বাড়াব না এবং কমাবও না।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সে সত্য বলে থাকলে সফলতা লাভ করল কিংবা বলেছেন, সে সত্য বলে থাকলে জান্নাত লাভ করল। (বুখারি শরিফ, হাদিস : ১৭৭১)

রমজানের রোজা রাখা প্রতিটি সুস্থমস্তিস্ক সম্পন্ন, প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের জন্য ফরজ।

কোনো বৈধ কারণ ছাড়া রোজা না রাখা বা ভেঙে ফেলা হারাম। তবে শরীয়ত কিছু বিশেষ অবস্থায় রোজা না রাখার বা ভেঙে ফেলার অনুমতি দিয়েছে, এবং পরবর্তীতে রোজা কাজা করতে হবে, এমন কারণ মোট নয়টি। নিচে সেগুলোর সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দেওয়া হলো—

১. সফর (ভ্রমণ)

যদি কেউ (শরয়ী) সফরে থাকে, তবে তার জন্য রোজা না রাখা বা ভেঙে ফেলা জায়েজ। পরে কাজা আদায় করতে হবে। তবে সফরে কোনো কষ্ট না হলে রোজা রাখা উত্তম।

২. কঠিন অসুস্থতা

যদি কেউ এমন অসুস্থ হয় যে রোজা রাখলে তার রোগ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, কিংবা প্রাণনাশ বা কোনো অঙ্গের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে, তাহলে রোজা না রাখার অনুমতি আছে। তবে সুস্থ হওয়ার পর কাজা আদায় করতে হবে, কাফফারা দিতে হবে না।

৩. গর্ভবতী বা দুগ্ধদানকারী নারী

যদি গর্ভবতী বা দুগ্ধদানকারী মা নিজের বা শিশুর জীবনের জন্য শঙ্কিত হয়, তবে রোজা না রাখা বা ভেঙে ফেলা জায়েজ। সুস্থ হওয়ার পর কাজা আদায় করা ফরজ, তবে কাফফারা লাগবে না।

 ৪. চরম ক্ষুধা ও তৃষ্ণা 

যদি খাওয়া ও পান না করার কারণে জীবননাশের বা মানসিক ভারসাম্য হারানোর আশঙ্কা থাকে, তাহলে রোজা ভেঙে ফেলা জায়েজ। পরে কাজা আদায় করতে হবে, তবে কাফফারা নেই।

৫. জীবননাশ বা মানসিক ভারসাম্য হারানোর আশঙ্কা

যদি কোনো সাপ বা বিষাক্ত প্রাণী কামড় দেয় বা অন্য কোনো কারণে জীবননাশ বা পাগল হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাহলে রোজা ভেঙে ফেলা জায়েজ। পরে কাজা আদায় করতে হবে, তবে কাফফারা লাগবে না।

৬. জিহাদ

যদি কোনো মুজাহিদ নিশ্চিত জানে যে সে যুদ্ধ করবে এবং যুদ্ধের সময় দুর্বল হয়ে পড়তে পারে, তাহলে তার জন্য রোজা ভাঙা জায়েজ। পরে কাজা আদায় করতে হবে, তবে কাফফারা নেই।

৭. জোরপূর্বক খাওয়ানো (ইকরাহ)

যদি কাউকে জোর করে রোজা ভাঙতে বাধ্য করা হয় এবং না খেলে প্রাণনাশ, অঙ্গহানি বা প্রচণ্ড শারীরিক নির্যাতনের আশঙ্কা থাকে, তাহলে রোজা ভেঙে ফেলা জায়েজ। তবে যদি সে ধৈর্য ধারণ করে, তাহলে আল্লাহর কাছে প্রতিদান পাবে।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top