শাওয়ালের ৬ রোজা রাখতে কি স্বামীর অনুমতি লাগবে?
প্রকাশিত:
৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:২৪
আপডেট:
১৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:৫২

ইসলামি শরিয়তে সাধারণত স্বামীর অনুমতি ছাড়া স্ত্রীর জন্য নফল রোজা রাখা নিষেধ। হাদিস শরিফে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন- لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لأَحَدٍ لأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا ‘আমি যদি কাউকে অন্যকোনো লোকের প্রতি সেজদা করার নির্দেশ দিতাম তাহলে অবশ্যই স্ত্রীকে তার স্বামীর প্রতি সেজদা করার নির্দেশ দিতাম। (তিরমিজি: ১১৫৯)
অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘সেই সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার জীবন! কোনো ব্যক্তি নিজ স্ত্রীকে তার শয্যার দিকে ডাকলে সে যদি তাতে সাড়া দিতে অস্বীকার করে তাহলে সেই সত্তা যিনি আকাশে রয়েছেন (আল্লাহ তাআলা) তার ওপর অসন্তুষ্ট হবেন যতক্ষণ না তার উপর তার স্বামী সন্তুষ্ট হয়।’ (বুখারি: ৩২৩৭, ৫১৫৩; মুসলিম: ১৪৩৬)
তাই স্বামীর হক আদায়ে যেন কোনোরকম ত্রুটি না হয় এবং সহবাসেও বাধা না আসে, সেজন্য শরিয়তের বিধান হলো- স্বামীর অনুমতি ছাড়া স্ত্রীর জন্য নফল রোজা রাখা নিষেধ। শাওয়ালের ছয় রোজা হলো নফল। অতএব, এই রোজা স্বামী অনুমতি না দিলে রাখা যাবে না।
মূলত স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের হকের প্রতি সচেতন থাকাই দাম্পত্য জীবনের সুখ-শান্তির চাবিকাঠি। আখেরাতেও তারই জয় হবে যিনি সর্বদা অন্যের হক আদায়ে সচেষ্ট থাকেন। তাই শরিয়তের নির্দেশনা হলো- স্বামীর অনুমতি ছাড়া নফল রোজা রাখা যাবে না। তবে, ফরজ রোজা রাখতে হবে।
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, এক নারী রাসুলুল্লাহ (স.)-এর কাছে এসে আরজ করলেন, হে আল্লাহর নবী! স্ত্রীর ওপর স্বামীর কী কী হক আছে? তিনি বললেন, স্বামীর অনুমতি ছাড়া রোজা রাখবে না, তবে ফরজ রোযা এর ব্যতিক্রম। স্বামীর অনুমতি ছাড়া রোজা রাখলে গুনাহগার হবে এবং তার রোজা কবুল হবে না। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ৬/৩১৭)
তবে, শাওয়ালের ছয় রোজার ব্যাপারে যেহেতু নবীজি বিশেষভাবে উৎসাহিত করেছেন, তাই স্বামীদের উচিত, একান্তই অসুবিধা না থাকলে স্ত্রীদের এই রোজাগুলো রাখতে দেওয়া এবং নিজেও এই রোজাগুলো রাখার চেষ্টা করা। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: