জুমাতুল বিদার গুরুত্ব ও ফজিলত
প্রকাশিত:
২২ মে ২০২০ ১৯:১৫
আপডেট:
১৩ মার্চ ২০২৫ ১১:০০

‘জুমুআ’ আরবি শব্দটির বাংলা অর্থ শুক্রবার আর 'বিদা' অর্থ শেষ। জুমাতুল বিদা অর্থ শেষ শুক্রবার। মাহে রমজানের শেষ জুমার দিনটি আমাদের সমাজে জুমাতুল বিদা নামে পরিচিত। জুমাতুল বিদার জামাত আদায়ের জন্য প্রতি বছর রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই মসজিদগুলোতে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি অংশ নেন। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ব্যক্তি ও পরিবারের জন্য কল্যাণ কামনার পাশাপাশি দেশ-জাতি ও গোটা মুসলিম উম্মার মঙ্গল ও বিশ্বশান্তি কামনা করে মোনাজাত করেন।
কিন্তু এবার করোনাভাইরাসের কারণে কিছুদিন মসজিদে যাওয়ায় বিধিনিষেধ থাকলেও পরে তা উঠিয়ে নেয়া হয়। এরপর থেকে দূরত্ব বজায়সহ বেশ কিছু শর্ত মেতে মুসল্লিরা মসজিদে নামাজ আদায় করছেন। গত দুই জুমআয় মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।আজ জুমার নামাজ আদায়ের পর ধর্মপ্রাণ ও রোজাদার মুসলমানরা নিজের জন্য দোয়া চাওয়ার পাশাপাশি দেশের অগ্রগতি, সমৃদ্ধি তথা মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সম্প্রীতি কামনা করবেন।
জুমাতুল বিদার মহত্ত্ব: দু’টি কারণে জুমাতুল বিদা অত্যন্ত মহিমাময়। (১) মাহে রমজানের কারণে: রমজান মাস সীমাহীন ফজিলতের মাস এবং এটি উম্মতে মোহাম্মাদীর জন্য মহান আল্লাহর বিশেষ উপহার স্বরূপ। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই তোমাদের রব বলেছেন, বনি আদমের প্রত্যেকটি নেক-আমলের সওয়াব দশগুণ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত দেওয়া হয় শুধু রোজা ছাড়া। কেননা রোজা শুধুই আমার জন্য, আর আমি নিজেই এর প্রতিদান দেবো।
আর নিশ্চয়ই রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মেশ্ক আম্বারের চেয়েও বেশি প্রিয়। তোমাদের কারো রোজা থাকা অবস্থায় যদি কেউ তার সঙ্গে জাহেলের মতো আচরণ করে তাহলে সে বলে দদেবে, আমি একজন রোজাদার। (সহিহ আল-বোখারি, হাদিস: ৫৯২৭, সহিহ মুসলিম, হাদিস ১১৫১, মুসান্নেফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস: ৮৮৯৪, মুসনাদে আহমাদ: ৯৭১৪) আর জুমার দিনের মাহাত্ম্য সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সূর্যদয়ের মাধ্যমে যে দিনগুলো হয় তার মধ্যে সর্বোত্তম দিন হলো জুমার দিন।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, সূর্যোদয় হওয়ার সবগুলো দিনের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উত্তম ও শ্রেষ্ঠ হলো জুমআর দিন। এই জুমআর দিনেই হজরত আদম আলাইহিস সালামকে আল্লাহ তাআলা সৃষ্টি করেছেন এবং জুমআর দিনই তাকে জান্নাত দান করেন এবং জুমআর দিনেই তাকে জান্নাত থেকে এই দুনিয়ায় প্রেরণ করেন এবং কেয়ামতও এই জুমআর দিনেই অনুষ্ঠিত হবে। (মুসলিম)।
আল্লাহ তা’আলা মুসলিম উম্মাহকে রমজানের শেষ জুমআ আদায়ের মাধ্যমে নিজেদের বিগত জীবনের সব গোনাহ থেকে মুক্তি লাভের তাওফিক দান করুন। জুমআর ফজিলত ও মর্যাদাকে রমজনের ফজিলতের সঙ্গে বাড়িয়ে মুমিনের সব আমলকে কবুল করার মাধ্যমে তাদের হৃদয়ে হেদায়েতের আলোতে ভরপুর করে দিন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: