বৃহঃস্পতিবার, ১০ই এপ্রিল ২০২৫, ২৭শে চৈত্র ১৪৩১

Shomoy News

Sopno


ভারতকে কাঁদিয়ে যুব এশিয়া কাপের শিরোপা বাংলাদেশের


প্রকাশিত:
৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:৩১

আপডেট:
১০ এপ্রিল ২০২৫ ১২:৪৪

ছবি সংগৃহীত

আজিজুল হাকিমের বলে আউট হলেন চেতন শর্মা। বাউন্ডারি লাইনে কালাম সিদ্দিকী ক্যাচ নিতেই আনন্দে ভাসল বাংলাদেশ। মাঠে ক্রিকেটারদের কৃতজ্ঞতার সিজদাহ। উড়ল বাংলাদেশের পতাকা। ভারতকে ৫৯ রানে হারিয়ে এশিয়ান ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্ব বাংলাদেশের। টানা দ্বিতীয়বারের মতো যুব ক্রিকেটে এশিয়ার সেরা হলো বাংলাদেশের ইয়াং টাইগার্সরা। ফাইনালের মহারণে বাংলাদেশের ১৯৮ রানের জবাবে ভারত শেষ হলো ১৩৯ রানে।

আরও একবার দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম। আরও একবার বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এশিয়ান ক্রিকেটের সেরা হওয়ার মাহেন্দ্রক্ষণ। এর আগে যে অবিস্মরণীয় মুহূর্ত দেশকে এনে দিয়েছিলেন মাহফুজুর রহমান রাব্বিরা, সেটাই এবার করে দেখালেন আজিজুল হক তামিমের দল। তবে এবারে আনন্দের উপলক্ষ্যটাও কিছুটা বেশি। কারণ ফাইনালে যে বাংলাদেশ উড়িয়ে দিয়েছে রেকর্ড ৮ বারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকেই।

১৯৯ রানের ছোটো এক লক্ষ্য। কিন্তু সেটাকেই ভারতের জন্য পর্বতসমান করে রেখেছিলেন বাংলাদেশের বোলিং ইউনিট। একের পর এক উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা। থিতু হতে দেননি কাউকেই। কেপি কার্তিকেয়া ছাড়া আর কেউই সেভাবে পরীক্ষা নিতে পারেননি বাংলাদেশের বোলারদের। তবে অনেকটা সময় ধরেই বাংলাদেশকে ভুগিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক মোহাম্মদ আমান। তাকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের পথটা সহজ করে দেন টাইগারদের অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম।

অবশ্য জয়ের পথে বাংলাদেশের পথটা সহজ করে ফেলেছিলেন মূলত ইকবাল হোসাইন ইমন। এক স্পেলে তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন তিনিই। একই ওভারে প্রায় একইরকমের ডেলিভারিতে ফেরান কার্তিকেয়া এবং নিখিলকে। দুজনেই ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। এক ওভার পরেই ফের তার আঘাত। এই দফায় আউট হলেন হারভানশ পানগালিয়া। এই দফায়ও উইকেটের পেছনে গিয়েছে ক্যাচ। বাংলাদেশও তাতে ম্যাচে ফিরেছে দারুণভাবে।

১৯৮ রানের লক্ষ্যে ভারতকে শুরুতেই চাপে ফেলে দেন আল ফাহাদ। দলীয় ৪ রানেই আয়ুশ মহাত্রেকে দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন এই পেসার। বিপদের আভাস দিচ্ছিলেন আলোচিত কিশোর বৈভব সুর্যবংশী। কিন্তু তাকে বাড়তে দেননি মারুফ মৃধা। খানিক পরেই রিজান ফেরান আন্দ্রে সিদ্ধার্থকে।

এরপরেই মূলত ম্যাচে ফেরার চেষ্টায় ভারত। কেপি কার্তিকেয়া আর মোহাম্মদ আমানের ২৯ রানের জুটি বেশ অনেকটাই এগিয়ে দেয় ভারতকে। আম্পায়ারের পক্ষ থেকে একাধিক সফট সিগন্যাল গিয়েছে বাংলাদেশের বিপক্ষে। যা নিয়ে মাঠে উত্তাপও ছড়িয়েছে বেশ। কিন্তু এরপরেই ইমনের দুর্দান্ত এক স্পেল। ৭৩ রানে ৩ উইকেট থেকে ৮১ রানে ৬ উইকেট।

এরপর কিরণ চারমোলেকে নিয়ে আমানের চেষ্টা ছিল জুটি গড়ার। তবে আল ফাহাদ ফেরান কিরণকে। উইকেটের পেছনে ব্যস্ত দিন ছিল ফরিদের। ৪টি ক্যাচ নিয়েছেন একাই। এরপরে আর বাড়েনি ভারতের ইনিংস। শেষ উইকেটে সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে আউট হলেন চেতন শর্মা। এবারেও উইকেট নিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। শিরোপা জয়ে যেন সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে কিছুটা বিপাকেই পড়েছিল বাংলাদেশ দল। পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ ক্রিকেট উপহার দিলেও ফাইনালের বিগ স্টেজে এসে ক্রিজে থিতু হতেই ভুলে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ভারতের বিপক্ষে যখন বলার মতো স্কোর নেই কারো ব্যাটে, তখন লোয়ার মিডল অর্ডারের ফরিদ হাসান দায়িত্ব নিলেন দলকে বলার মতো সংগ্রহ এনে দিতে। সঙ্গী হিসেবে পেয়েছেন মারুফ মৃধাকে।

ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে দুইশ’র আগেই থামল বাংলাদেশইনিংসের শুরু থেকেই রানের জন্য সংগ্রাম করতে হয়েছে বাংলাদেশের যুবাদের। ৭ম ওভারে কালাম সিদ্দিকী আউটের আগে ১৬ বলে করেছিলেন মোটে ১ রান। সেটাই হয়ত ইঙ্গিত দেয়, ব্যাটিং পিচে ঠিক কতটা সংগ্রাম করেছে বাংলাদেশ। তবে তিনে নামা আজিজুল হাকিম তামিম কিছুটা হতাশই করেছেন। পুরো আসরে অধিনায়ক তামিম মুগ্ধতা ছড়ালেও ফাইনালে করতে পেরেছেন মোটে ১৬ রান। আরেক ওপেনার জাওয়াদ আবরারও ২০ রানের বেশি করতে পারেননি।

৬৬ রানে অধিনায়ক আজিজুল তামিম বিদায়ের পরেই বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডকে এগিয়ে নিয়েছেন দিনের সেরা দুই ব্যাটার রিজান এবং শিহাব জেমস। ৬৭ বলে ৩ চার আর ১ ছক্কায় শিহাব করেছেন ৪০ রান। দলীয় ১২৮ রানে বিদায় নেন আয়ুশ মহাত্রের বলে। দেবাশীষ এসেই ফিরেছেন ৩ বলে ১ রান করে। ১৫৫ রানে ফিরে যান রিজান নিজেও। মিস করেছেন ফিফটি।

সব ব্যাটিং বিপর্যয়েই নাকি একটা করে রানআউট থাকে। ক্রিকেটের সেই অলিখিত নিয়ম মেনে ১৬৫ রানের মাথায় রান আউটের শিকার হন সামিউন বশির। দায়িত্ব নিয়ে পারেননি ফাহাদও। ফরিদ হাসান যখন একাকী দাঁড়িয়ে, তখন ১৯ বলে ১১ রান করে তাকে সঙ্গ দিয়েছেন মারুফ মৃধা। নবম উইকেটে তারা যোগ করলেন ৩০ রান। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেমেছে ১৯৮ রানে।

কিন্তু জয়ের জন্য শেষের ওই রানটুকুই হয়ে উঠেছে যথেষ্ট। শুরু থেকেই ভারতকে চাপের মাঝে রাখা বাংলাদেশ দুবাইয়ে প্রবাসী সমর্থকদের মুখে হাসি এনে দিয়েছেন। বাংলাদেশ পেল এশিয়ানদের যুব ক্রিকেটে নিজেদের টানা দ্বিতীয় শিরোপা।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top