বাংলাদেশে প্রথম গভীর অনুসন্ধান কূপ খনন চুক্তি
প্রকাশিত:
৭ আগস্ট ২০২৫ ১৯:১৫
আপডেট:
৭ আগস্ট ২০২৫ ২২:১০

তিতাস ও বাখরাবাদ ফিল্ডে ২টি গভীর অনুসন্ধান কূপ খননের লক্ষ্যে বিজিএফসিএল এবং চাইনিজ প্রতিষ্ঠান সিসিডিসির মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির আওতায় তিতাস-৩১ গভীর কূপ (৫৬০০ মিটার) এবং বাখরাবাদ-১১ গভীর (৪৩০০মিটার) কূপ খনন করা হবে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) পেট্রোবাংলার বোর্ড রুমে ওই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত সচিব ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. রেজানুর রহমান।
বিজিএফসিএলের পক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর করেন কোম্পানি সচিব মো. মোজাহার আলী, এবং সিসিডিসির পক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর করেন লি জিয়াওমিং, সিইও, সিসিডিসি।
এতদিন ৪ হাজার মিটারে সীমাবদ্ধ ছিল তেল গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম। বাংলাদেশ জ্বালানি ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে ভূ-গর্ভস্থ গভীরতম স্তর হতে গ্যাস অনুসন্ধান করতে যাচ্ছে। যা ওই চুক্তির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে।
(বিজিএফসিএল) এর আওতায় ২টি গভীর অনুসন্ধান কূপ, তিতাস-৩১ ডিপ (৫৬০০ মিটার) এবং বাখরাবাদ-১১ ডিপ (৪৩০০মিটার) এর খনন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। কূপ খনন, ভূমি অধিগ্রহণ ও গ্যাস গ্যাদারিং পাইপলাইন নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রকল্পটির আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৯৮ কোটি টাকা। যার মধ্যে জিওবি ঋণ ৫৫৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা এবং বিজিএফসিএল এর নিজস্ব অর্থায়ন ২৩৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। উক্ত প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদকাল জুলাই-২০২৫ থেকে ডিসেম্বর ২০২৭ পর্যন্ত।
তিতাস ও বাখরাবাদ ফিল্ডে ২০১১-২০১২ সালে বাপেক্স কর্তৃক পরিচালিত ৩ডি সাইসমিক জরিপকৃত ডাটার ওপর ভিত্তি করে সম্ভাবনাময় কূপ দু'টি খননের উদ্যাগ গ্রহণ করা হয়েছে।
জিওলজিক্যাল এবং জিওফিজিক্যাল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রস্তুতকৃত জিওটেকনিক্যাল অর্ডার অনুযায়ী তিতাস ফিল্ডের অনাবিষ্কৃত ওভারপ্রেশার জোনের নিচে Bhuban ও Borail ফরমেশনের ৪টি স্তরকে এবং বাখরাবাদ ফিল্ডের অনাবিষ্কৃত ওভারপ্রেশার জোন এর নিচে Bhuban ও Borail ফরমেশনের ২টি স্তরকে টার্গেট করে ড্রিলিং করা হবে।
গভীর কূপ খননের মাধ্যমে তিতাস ও বাখরাবাদ ফিল্ডের ৩৭০০-৫৬০০ মিটার ভূ-অভ্যন্তরে গ্যাসের উপস্থিতি, বিস্তৃতি ও গ্যাস রিজার্ভ নিশ্চিত হওয়ার আশা করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছে সিসিডিসি। কুপ দুটিতে রিজার্ভার প্রেসার প্রায় ১৫০০০ পিএসআই এবং তাপমাত্রা প্রায় ৩৯০ ডিগ্রি ফারেনহাইট যা বাংলাদেশে প্রথম উচ্চ চাপ ও উচ্চ তাপমাত্রার কূপ হবে। ইতঃপূর্বে বাংলাদেশে অভারপ্রেসারের নিচে উচ্চ চাপ ও উচ্চ তাপমাত্রার কূপ খনন করা হয়নি। নতুন স্তরে সফলভাবে খনন সম্পন্ন হলে দেশের গ্যাস সেক্টরে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে এবং বর্তমানের গ্যাস রিজার্ভ বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছে পেট্রোবাংলা।
খনন শেষে তিতাস-৩১ গভীর কূপ হতে দৈনিক প্রায় ১৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস এবং বাখরাবাদ-১১ কূপ হতে দৈনিক প্রায় ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে মর্মে আশা করা যায়।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: