রাঙামাটিতে জল উৎসবে মেতেছেন মারমা তরুণ-তরুণীরা
প্রকাশিত:
১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:২৫
আপডেট:
২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:২০

পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে বসবাসরত দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মারমা সম্প্রদায় ঐতিহ্যবাহী জল উৎসবে মেতেছে। মারমা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) শুরু হয়েছে মারমাদের নতুন বছর। পুরোনো বছরের গ্লানি, ক্লেশ ধুয়ে মুছে ফেলার প্রতীকী উৎসব হিসেবে শনিবার (১৯ এপ্রিল) জলকেলির মাধ্যমে আনন্দ উৎসবে মেতেছেন মারমারা।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয় এই উৎসব। এবারের উৎসবের স্লোগান ছিল ‘নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখার প্রয়াসে’। দুপুরে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন অতিথিরা।
জল উৎসব অনুষ্ঠানে মারমা সংস্কৃতি সংস্থার (মাসস) সভাপতি থোয়াই সুই খই মারমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান রিপন চাকমা, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, পুলিশ সুপার ড. এস এম ফরহাদ হোসেন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার প্রমুখ। এছাড়াও নেদারল্যান্ডস ও ইতালির রাষ্ট্রদূত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে কেউই আর এখন পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী নয়। সবাই সমান তালে চলবে। পাহাড়ের বাসিন্দা বলে আপনারা নিজেদের সমতলের চেয়ে পিছিয়ে পড়া মনে করবেন না। আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামে কোয়ালিটি এডুকেশনকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। সবাইকে সমান গুরুত্ব দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়ন হবে।
তিনি আরও বলেন, আমি বিশ্বাস করি এই ধরনের অনুষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে পাহাড়ে সম্প্রীতি বৃদ্ধি পাবে। আমি মাসসকে ধন্যবাদ জানাই।
প্রথম পর্বের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ফিতা কেটে এবারের মাহা সাংগ্রাই রিলং পোয়ে জল উৎসবের উদ্বোধন করেন অতিথিরা। পানি খেলায় অংশ নেয় মূলত অবিবাহিত তরুণ-তরুণীরা। পুরোনো বছরের সকল দুঃখ, কষ্ট, বেদনাকে ভুলে গিয়ে একে অন্যের প্রতি ভালোবাসায় ভরিয়ে দিতে একে অপরকে পানি ছিটিয়ে শুদ্ধ করে নেন মারমা তরুণ-তরুণীরা।
উৎসবে তরুণ-তরুণীরা মুখোমুখি হয়ে ছোট ছোট পাত্রে রাখা পানি একে অপরের দিকে ছুড়ে দেন। বাঁশির তালে তালে চলে দলীয় পর্যায়ে পানি ছিটানো। এই খেলায় যেমন আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে সবাই, তেমনি তরুণ তরুণীদের কাছে এটি হয়ে উঠে একে অপরের প্রতি অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যম।
জলকেলির পাশাপাশি চলে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে শিল্পীরা গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন। এছাড়া মাঠে আয়োজন হয় গ্রামীণ মেলার।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: