বৃহঃস্পতিবার, ৮ই মে ২০২৫, ২৫শে বৈশাখ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


বিশ্বকবির ১৬৪তম জন্মজয়ন্তীর মূল অনুষ্ঠান শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে


প্রকাশিত:
৮ মে ২০২৫ ১২:৩৭

আপডেট:
৮ মে ২০২৫ ১৬:৩০

ছবি সংগৃহীত

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার (৮ মে)। ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। এবার জন্মজয়ন্তীর মূল অনুষ্ঠান কুষ্টিয়ার কুমারখালীর শিলাইদহে কবির স্মৃতি বিজড়িত কুঠিবাড়িতে অনুষ্ঠিত হবে।

শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে বিশ্বকবি দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন। এসময়ে তিনি কালজয়ী অনেক কাব্যগ্রন্থ, ছোট গল্প, নাটক ও উপন্যাস রচনা করেছেন।

‘রবীন্দ্রনাথ ও বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে সরকারি আয়োজন তিন দিনের। বিশ্বকবির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, প্রতিষ্ঠানও অনুষ্ঠানমালা সাজিয়েছে। এ উপলক্ষ্যে রবীন্দ্রমেলা, রবীন্দ্রবিষয়ক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গান-নাটক-আবৃত্তি, বক্তৃতা সহ নানা আয়োজন করা হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে যথাযোগ্য মর্যাদায় বিশ্বকবির স্মৃতিবিজড়িত কুঠিবাড়ীতে রবীন্দ্রজয়ন্তীর মূল অনুষ্ঠান উদযাপিত হবে।

কুঠিবাড়ির কাস্টোডিয়ান মো. আল আমিন জানান, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে তিন দিনব্যাপী কবিগুরুর জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিগুরুর গান, কবিতা ও নৃত্য অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন একটি করে নাটক মঞ্চস্থ হবে। অনুষ্ঠান সফল করতে ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতিও সম্পন্ন করা হয়েছে। নিছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় কুঠিবাড়ি চত্বরে কবিগুরুর জন্মোৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হবে। অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে প্রধান অতিথি করা হয়েছে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের মফিদুর রহমান সভাপতির বক্তব্য রাখবেন, স্বাগত বক্তব্য রাখবেন অতিরিক্ত সচিব ফরহাদ সিদ্দিক, স্মারক বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেবেন গবেষক ও অধ্যাপক মনসুর মুসা। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করবেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান।

বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আজ নোবেল বিজয়ী এই বাঙালি কবিকে স্মরণ করবেন তার অগণিত ভক্তরা। শুধু দুই বাংলার বাঙালিই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাংলা ভাষাভাষী কবির জন্মবার্ষিকীর দিবসটি পালন করবে হৃদয় উৎসারিত আবেগ ও শ্রদ্ধায়। রবীন্দ্রনাথের রচনায় মানুষের যাবতীয় আবেগ, অনুভূতি, আকাঙ্ক্ষা, অভিব্যক্তির অতুলনীয় প্রকাশ ঘটেছে। বাঙালির সব সমস্যা-সংকটে তার গান, কবিতা জুগিয়েছে সাহস ও প্রেরণা।

কুষ্টিয়া শহর থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরে শিলাইদহ গ্রামে অবস্থিত কবির কুঠিবাড়ি। স্মৃতিধন্য শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে বিশ্বকবি দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন। এখানে বসেই তিনি রচনা করেছেন কালজয়ী অনেক কাব্যগ্রন্থ, ছোট গল্প, নাটক ও উপন্যাস। রবীন্দ্র সাহিত্যে শিলাইদহের গুরুত্ব অপরিসীম। যার কারণে শুধু জন্মোৎসব অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে নয় সব সময়ই কবির স্মৃতি হাতড়াতে দেশ বিদেশের নানা প্রাপ্ত থেকে ছুটে আসেন কবি ভক্ত ও দর্শনার্থীরা।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান বলেন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় অবস্থিত শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্বকবির সাহিত্যকর্ম নিয়ে আলোচনা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ কলকাতার বিখ্যাত জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সারদা দেবীর চতুর্দশ সন্তান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা সাহিত্যকে তিনি দিয়ে গেছেন এক নতুন মাত্রা। তার রচিত সঙ্গীত, কবিতা ও গদ্য জড়িয়ে আছে বাঙালির সত্তায়। সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার পান রবীন্দ্রনাথ। গীতাঞ্জলি কাব্যের জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়ে সারা বিশ্বে বাংলা ভাষার মর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। বাংলা সাহিত্যে এটিই একমাত্র নোবেল পুরস্কার। এশিয়া মহাদেশে সাহিত্যে নোবেল পাওয়া তিনিই প্রথম লেখক। রবীন্দ্রনাথের লেখা গান ‘আমার সোনার বাংলা’ বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত।

বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয়ে তিনি শিক্ষা গ্রহণ করেননি। গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তার শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ৮ বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। ১৮৭৪ সালে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকায় তার ‘অভিলাষ’ কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল তার প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেন। এর চার বছর পর বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করে। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন।

১৯৩৭ সালে একবার অচৈতন্য হয়ে গিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থা হয়েছিল কবির। সেবার সেরে উঠলেও ১৯৪০ সালে অসুস্থ হওয়ার পর আর সেরে উঠতে পারেননি। এই সময়পর্বে রচিত রবীন্দ্রনাথের কবিতাগুলো ছিল মৃত্যুচেতনাকে কেন্দ্র করে। মৃত্যুর সাত দিন আগ পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ সৃষ্টিশীল ছিলেন। দীর্ঘ রোগভোগের পর ১৯৪১ সালে জোড়াসাঁকোর বাসভবনেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top