রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বাদ দিয়ে বছরে ২৩৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হতে পারে।
পাইপলাইনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি সরবরাহ শুরু
প্রকাশিত:
১৬ আগস্ট ২০২৫ ১২:২৭
আপডেট:
১৬ আগস্ট ২০২৫ ১৫:৪১

পাইপলাইনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল সরবরাহ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে।
শনিবার বেলা ১১টায় চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় পদ্মা অয়েলের ডেসপাস টার্মিনাল এলাকায় এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
বিপিসির পাইপলাইনে তেল সরবরাহের প্রকল্প পরিচালক আমিনুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পাইপলাইনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় বছরে ২৭ লাখ টন ডিজেল সরবরাহ করা যাবে।
“গত দেড় মাস আমরা পরীক্ষামূলকভাবে সরবরাহ কার্যক্রম চালিয়েছি। তাতে কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি।”
পাইপলাইনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় তেল পরিবহনে ২০১৬ সালে এ প্রকল্পের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। কিন্তু এর কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। তিন দফা মেয়াদ বাড়ানোর পর প্রকল্পটির কাজ শেষ হয় এ বছরের মার্চে।
প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি বছরের ২২ জুন পাইপ লাইন দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ডিজেল সরবরাহ শুরু হয়। গেল ৪ অগাস্ট পর্যন্ত ৪ কোটি ৮২ লাখ লিটার ডিজেল সরবরাহ করা গেছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে নদীপথে তেল নেওয়া হয় নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপোতে। এরপর সেখান থেকে সড়কপথে ঢাকায় তেল পরিবহন করা হয়। এত বিপুল পরিমাণ খরচ পড়ত। পাইপলাইনে তেল সরবরাহ হলে এ খরচ কমবে।
তিনি বলেন, “প্রতি বছর প্রকল্প থেকে ৩২৬ কোটি টাকা আয় হবে। পরিচালন ব্যয় হিসেবে খরচ হবে বছরে ৯০ কোটি টাকা। এতে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ টাকা সাশ্রয় হবে। প্রকল্পের খরচ ১৬ বছরের মধ্যে উঠে আসার কথা।”
প্রকল্প পরিচালক আমিনুল হক বলেন, “বর্তমানে নৌ ও সড়কপথে ডিজেল পরিবহনে যে খরচ হচ্ছে তা থেকে অনেক কমে পাইপ লাইনে জ্বালানি পরিবহন করা যাবে। রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বাদ দিয়ে বছরে ২৩৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হতে পারে।”
তিনি বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে ‘স্বল্প সময়ে, দ্রুত গতিতে’ তেল পরিবহন করা যাবে। প্রতিকূল পরিবেশেও বিশেষ করে বিরূপ আবহাওয়াসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ও তেল সরবরাহ করা যাবে। এতে করে পরিবেশ দূষণ ও ‘সিস্টেম লস’ রোধ করা সম্ভব হবে।
প্রকল্পের তথ্য অনুযায়ী, এ পাইপলাইনের দুটি অংশ রয়েছে। একটি অংশ চট্টগ্রাম মহানগরীর পতেঙ্গা থেকে ফেনী, কুমিল্লা, চাঁদপুর, মুন্সীগঞ্জ হয়ে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ডিপো পর্যন্ত। দ্বিতীয় অংশটি গোদনাইল থেকে ফতুল্লা পর্যন্ত। পাইপলাইন ছাড়াও প্রকল্পের আওতায় বুস্টার পাম্প, ৯টি জেনারেটরসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম রয়েছে।
শুরুতে এ প্রকল্পের ব্যয় ২ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা ধরা হলেও কয়েক দফা বেড়ে তা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকায়। বিপিসির এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: