শনিবার, ২৮শে জুন ২০২৫, ১৪ই আষাঢ় ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


শাস্তির হুমকির মধ্যেই আজ ‘মার্চ টু এনবিআর’, প্রত্যাহারের আহ্বান মন্ত্রণালয়ের


প্রকাশিত:
২৮ জুন ২০২৫ ১০:১২

আপডেট:
২৮ জুন ২০২৫ ১৩:১৫

ছবি সংগৃহীত

‘কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে শাস্তি ‘ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এমন হুমকির মধ্যেই আজ শনিবার ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি পালিত হবে বলে জানিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। শুক্রবার (২৭ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

ঐক্য পরিষদ বলছে, শনিবার সারাদেশের আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তর থেকে এনবিআর অভিমুখে ‘শান্তিপূর্ণ মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি পালিত হবে। একই সঙ্গে এদিন থেকে দেশের আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন যথারীতি চলবে। তবে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এই কমপ্লিট শাটডাউনের আওতাবহির্ভূত থাকবে।

এর কিছুক্ষণ আগে এনবিআরের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কর্মরত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত, অফিস ত্যাগ, দেরিতে অফিসে উপস্থিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি বিধি মোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকেও। বিজ্ঞপ্তিতে বদলির আদেশ পুনর্বিবেচনা এবং রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ সংশোধনের আশ্বাস দিয়ে এনবিআরের আন্দোলনরত কর্মীদের কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহবান জানানো হয়েছিল।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঐক্য পরিষদের ব্যানারে চলমান আন্দোলনের কারণে অচলাবস্থা নিরসনে বৃহস্পতিবার আড়াই ঘণ্টা আলোচনা হয়। অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে ওই সভায় অর্থসচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, এনবিআর চেয়ারম্যান ও এনবিআরের ১৬ জন সদস্য অংশ নেন। তবে বৈঠকে পরিষদের কোনো প্রতিনিধি ছিলেন না। শুক্রবারের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ঐক্য পরিষদ।

বৈঠক শেষে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেছিলেন, আন্দোলনকারীদের কাছ থেকে সিদ্ধান্ত এলে আজকের মধ্যেই একটা সমাধান আসতে পারে। তবে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলছিলেন, আগামী সপ্তাহে আরেকটি বৈঠক হবে। তখন একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

তবে এনবিআর চেয়ারম্যান ও অর্থ উপদেষ্টার মুখ থেকে আশার কথা শোনা গেলেও নিজেদের দাবি ও কর্মসূচির বিষয়ে অটল থাকেন আন্দোলনকারীরা। এর মধ্যে দুই পক্ষ থেকে পাল্টাপাল্টি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলো।

পরিষদ বলছে, দেশ ও রাজস্বের স্বার্থে পরিষদের রাজস্ব সংস্কার বিষয়ে দাবিগুলো ও এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবি জানাতে যেকোনো সময় অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় বসতে পরিষদ প্রস্তুত। রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে এনবিআর সংস্কার বিষয়ে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছে সংগঠনটি।

আন্দোলন ঘিরে বড় ধরনের রাজস্ব ঘাটতি পোষাতে শনিবারও এনবিআরের সব দপ্তর খোলা রাখার নির্দেশনা ছিল। মে মাসে এনবিআর দুই ভাগ করে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও রাজস্বনীতি নামে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ করে অধ্যাদেশ জারি হয়। সেটি বাতিলের দাবিতে কলমবিরতিসহ নানা কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনে নামেন এনবিআরের কর্মীরা। তাদের আন্দোলনের মধ্যে সরকার পিছু হটে। বলা হয়, অধ্যাদেশ বাস্তবায়নে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

এরপর কাজে যোগ দিলেও আন্দোলনকারীরা এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে অটল থাকেন এবং সংস্থার কার্যালয়ে তাঁকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেন। পরে সেনাবাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় অফিসে ফেরেন এনবিআর চেয়ারম্যান। তিনি দায়িত্বে এসে আন্দোলনে থাকা কয়েক কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক বদলি, সেমিনার করতে চাইলে সে জন্য কক্ষ বরাদ্দ না দেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে কর্মকর্তাদের।

বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘রপ্তানিতে ব্যাঘাত ঘটলে বাংলাদেশের অর্থনীতির ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হবে। রপ্তানির সঙ্গে সময় সম্পর্কিত। এক দিনও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি, তাঁরা রপ্তানি চালু রাখবেন। আলোচনার মাধ্যমে আমরা দেখেছি ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধেরও অবসান হয়েছে। এ সমস্যাও আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব।’

তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের মধ্যে কেউ এই আন্দোলনে জড়িত থাকলে আমরা তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চাই। দেশকে অচল করে দেবে—এমন একটা আন্দোলনের পেছনে যদি ব্যবসায়ীরা ইন্ধন দেন তাঁরা কখনো দেশের উন্নয়ন চান না। প্রয়োজনে ওই ব্যবসায়ীদের আমরা বয়কট করব। তবে ব্যবসায়ীরা ইন্ধন দিচ্ছেন, অর্থ উপদেষ্টার এমন বায়বীয় কথা বলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top