রবিবার, ৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩শে ভাদ্র ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


কোটি টাকার ঘুষে ট্যাক্স ফাইলে বৈধ হয় ২৩৭ কোটি ৫৯ লাখ


প্রকাশিত:
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:৪৮

আপডেট:
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:৩১

ছবি সংগৃহীত

এনবিআরের আওতাধীন কর অঞ্চল-৫ এর সহকারী কর কমিশনার জান্নাতুল ফেরদৌস মিতুর সঙ্গে ১ কোটি টাকার চু্ক্তি হয়েছিল সালাহ উদ্দিন আহমেদের আইনজীবীর। বিনিময়ে ১২ করবর্ষের কর ফাইলে সম্পূর্ণ করে সাজিয়ে ২৩৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকার আয় যোগ করা হয়েছিল। তাও আবার করমুক্ত সেবা খাতে।

অথচ ব্যবসায়ী সালাহ উদ্দিন আহমেদ দিনের পর দিন কর ফাঁকি দিয়ে আসছিলেন। এমনকি তিনি আপিল, ট্রাইব্যুনাল ও হাইকোর্টে গিয়ে নিজের পক্ষে রায় পাননি। এরপরই আয়কর আইনজীবী ওবায়দুল হক সরকার নতুন ফন্দি আঁটলেন। সার্কেল কর্মকর্তাকে কোটি টাকা ঘুষ চুক্তি করে বাড়তি সুবিধা হাতিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করছেন। ইতোমধ্যে ঘুষের ৩৮ লাখ টাকা পরিশোধও করেছেন। বিনিময়ে সার্কেল থেকে পুরো ফাইল নিজের চেম্বারে নিয়ে ১২ কর বর্ষের পুরাতন রিটার্ন পরিবর্তন করেছেন।

এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ইউনিটের তদন্তে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ইতোমধ্যে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে ১ সেপ্টেম্বর মিতুকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে করদাতা সালাহ উদ্দিন আহমেদ এবং আয়কর আইনজীবী ওবায়দুল হক সরকারের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সই করা প্রজ্ঞাপন সূত্রে জানা যায়, সহকারী কর কমিশনার জান্নাতুল ফেরদৌস মিতু কর অঞ্চলের সার্কেল-৯৩’র করদাতা সালাহ উদ্দিন আহমেদ থেকে ৩৮ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন। যার বিনিময়ে এই করদাতার মনোনীত প্রতিনিধিকে (আয়কর আইনজীবী বা আইটিপি) স্পর্শকাতর আয়কর নথির অধিকাংশ পূর্ববর্তী রেকর্ড সরবরাহ করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে পুরোনো আয়কর রিটার্ন, অর্ডার শিট, কর নির্ধারণী আদেশ, আপীল ও ট্রাইব্যুনালের আদেশ এবং অন্যান্য ডকুমেন্টসগুলো। সেজন্য এই সহকারী কর কমিশনারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি-১২ অনুযায়ী সহকারী কর কমিশনার জান্নাতুল ফেরদৌস মিতুকে এনবিআরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগপূর্বক চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি বিধি মোতাবেক খোরপোশ ভাতা প্রাপ্য হবেন।

এনবিআর সূত্রে আরও জানা যায়, তথ্য উপাত্ত পাওয়ার পর সিআইসি কর্মকর্তারা সার্বিক বিষয় যাচাই করেন। যেখানে কর আইনজীবী ওবায়দুল হক সরকারের চেম্বারে ১২ করবর্ষের পুরাতন রিটার্নসহ অন্যান্য প্রমাণ পাওয়া যায়। কর্মকর্তারা তার চেম্বার থেকে করদাতা সালাহ উদ্দিন আহমেদের আয়কর সংক্রান্ত সব নথি উদ্ধার করেন। যেখানে দেখা যায় ওবায়দুল হক পুরাতন ১২ করবর্ষের রিটার্ন নতুন করে তৈরি করেছেন। তাতে তিনি প্রায় ২৩৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকার করমুক্ত আয় বা সম্পদ সংযোজন করেছেন। তবে সালাহ উদ্দিন আহমেদের পুরাতন ফাইলে প্রযোজ্য আয়করের পাশাপাশি ৭৫ কোটি টাকার আয়কর ফাঁকিও উদ্ঘাটন করা রয়েছে। ওবায়দুল হক সালাহ উদ্দিন আহমেদের ১২ করবর্ষের রিটার্নসহ পুরো ফাইল তার চেম্বারে নিয়ে নতুন রিটার্ন তৈরি করে দিতে সহকারী কর কমিশনার জান্নাতুল ফেরদৌস মিতু ও সার্কেলের কর্মচারীদের সঙ্গে এক কোটি টাকার চুক্তি হয়। মিতুর মোবাইল ফোনে কিছু প্রমাণ ও তার লিখিত স্বীকারোক্তিতে প্রমাণ মিলেছে।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top