রবিবার, ৪ঠা মে ২০২৫, ২১শে বৈশাখ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


ঢাকা নার্সিং কলেজে চলছে কমপ্লিট শাটডাউন

ইন্টার্নশিপ ভাতাসহ ৬ দাবিতে আন্দোলনে নার্সিং শিক্ষার্থীরা


প্রকাশিত:
৪ মে ২০২৫ ১৩:১২

আপডেট:
৪ মে ২০২৫ ১৮:৪৩

ছবি সংগৃহীত

২০ হাজার টাকা ইন্টার্নশিপ ভাতা, স্বতন্ত্র ক্যারিয়ার পাথ ও যোগ্য শিক্ষক নিয়োগসহ ছয় দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি শুরু করেছেন ঢাকা নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা।

রোববার (৪ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।

এ সময় শতাধিক শিক্ষার্থী প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন। তারা স্লোগান দেন— “বিএসসি নার্স মানেই পেশাদার নেতৃত্ব”, “যোগ্য শিক্ষক চাই, অজুহাত নয়”, “ইন্টার্ন মানেই কাজ, চাই তার মর্যাদা”।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে কারিকুলামের অব্যবস্থাপনা, অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ এবং পেশাগত স্বীকৃতির অভাবে তারা ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। বিশেষ করে পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করে হঠাৎ তা বাতিল বা পেছানো শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

মিম খাতুন নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা ক্লাস-পরীক্ষা চাই, কিন্তু তার আগে চাই সম্মানজনক শিক্ষাব্যবস্থা ও ক্যারিয়ার সিকিউরিটি। অযোগ্য শিক্ষক দিয়ে কোর্স চালানো মানে আমাদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করা।

রাজীব হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইন্টার্নশিপে কাজের চাপ সবচেয়ে বেশি, অথচ সম্মান সবচেয়ে কম। ৫ হাজার টাকা দিয়ে কি ঢাকায় থাকা, খাওয়া, যাতায়াত চলে? আমরা তো কাজ করেই দিচ্ছি, তাহলে ভাতা ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করতে এত সমস্যা কোথায়?

সাবিনা ইয়াসমিন নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ২০১৮ সালের পর থেকে আমাদের বিএসসি ইন নার্সিং কারিকুলামে একের পর এক পরিবর্তন আনা হয়েছে, কিন্তু এগুলোর বেশিরভাগই বাস্তব চাহিদা বা আন্তর্জাতিক মানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। মূলত সিনিয়র ডিপ্লোমা নার্সদের স্বার্থ রক্ষার জন্য এসব পরিবর্তন হয়েছে— ফলে আমরা যারা নতুন করে বিএসসি কোর্সে ভর্তি হয়েছি, তাদেরকেই বারবার পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, একটি আধুনিক ও একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার কথা বলা হলেও বাস্তবে সেটা হচ্ছে না। কারিকুলামে বৈষম্য থাকলে আমরা চাকরির বাজারে যেমন পিছিয়ে পড়ব, তেমনি মাস্টার্স বা উচ্চশিক্ষায়ও সুযোগ কমে যাবে। এতে করে পুরো পেশাটাই হুমকির মুখে পড়বে। আমরা এই অব্যবস্থার স্থায়ী সমাধান চাই।

শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি হলো—

১. ইউজিসি ও সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ।

২. গ্র্যাজুয়েট নার্সদের সরাসরি প্রথম শ্রেণির পদে নিয়োগ।

৩. বিএসসি নার্সদের জন্য স্বতন্ত্র অর্গানোগ্রাম ও ক্যারিয়ার পাথ প্রণয়ন।

৪. ২০১৬ সালের গৃহীত নিয়োগ বিধির বাস্তবায়ন।

৫. কারিকুলামে সমতা আনয়ন করে ডিপ্লোমা ও বিএসসি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈষম্য দূর করে একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু।

৬. ইন্টার্নশিপ ভাতা ২০ হাজার টাকায় উন্নীতকরণ।

শিক্ষার্থীদের ভাষ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সাল থেকে বিএসসি ইন নার্সিং কারিকুলামে একাধিক পরিবর্তন আনা হলেও তা যুগোপযোগী নয় এবং সিনিয়র ডিপ্লোমাধারীদের স্বার্থে নতুন শিক্ষার্থীদের পেছনে ফেলে রাখা হচ্ছে।

কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের শাটডাউন কর্মসূচি চলবে। প্রয়োজনে তারা জাতীয় পর্যায়ে অবস্থান কর্মসূচিতে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top