বনশ্রীতে ভবনের অতিরিক্ত অংশ মুহুর্মুহু ভাঙছে রাজউক
প্রকাশিত:
২০ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:৪১
আপডেট:
২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১১:২০

বনশ্রীতে অনুমোদিত ভবন নকশার অতিরিক্ত অংশ এক্সেভেটর দিয়ে মুহুর্মুহু করে ভাঙছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এর আগে সকালে সাড়ে ১০টায় ওই এলাকায় অভিযান শুরু করে রাজউক। অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লিটন সরকার।
রোববার (২০ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে দেখা যায়, দক্ষিণ বনশ্রী এলাকার ‘কে’ ব্লকের ১৮ নম্বর রোডে দুইটি নির্মাণাধীন ভবন ভাঙা হয়।
শুরুতে বনশ্রীর ‘এন’ ব্লকের নিউ রসূলবাগের আর এস দাগ নং-৭৮১ জায়গায় একটি বেজমেন্টেসহ ১০ তলা ভবনের অনুমোদন নেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, সেখানে বেজমেন্ট ছাড়া ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ডিপিডিসিকে তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করার নির্দেশ দেন ও বৈদ্যুতিক মিটার জব্দ করেন। একইসঙ্গে ভবন নির্মাণ মালিককে দ্রুত এসে দেখা করতে বলেন।
পরে দক্ষিণ বনশ্রীর ‘কে’ ব্লকের ১৮ নম্বর রোডে ২১৪ নম্বর প্লটে যান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। সেখানে একটি ভবনের একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ চলছিল। কিন্তু সেখানে নির্মাণকাজে থাকা ব্যক্তিরা তাৎক্ষণিক রাজউক অনুমোদিত প্ল্যান দেখাতে পারেনি। ফলে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডকে (ডিপিডিসি) তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও মিটার জব্দের নির্দেশ দেন। এরপর ১৯ নম্বর রোডের ১৭২ নম্বর প্লটেও একই অবস্থা দেখে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও মিটার জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়।
১৮ নম্বর রোডের ২০২ নম্বর প্লটের নির্মাণাধীন ভবন মেপে দেখা যায় ভবনের সামনে পাঁচ মিটার খালি জায়গা রাখার কথা ছিল। কিন্তু সেটি রাখা হয়নি। এ বিষয়ে যোগাযোগের জন্য মালিকের সঙ্গে একাধিকবার চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অতিরিক্ত অংশ ভাঙার নির্দেশ দেন। পরে রাজুকের এক্সেভেটর দিয়ে সেটি ভাঙা হয়।
দুপুর ১২টায় যাওয়া হয় একই সড়কের ১৯১ নম্বর প্লটে। ছোট ভবনটি সামনে ও পাশে নির্ধারিত জায়গা রাখার কথা থাকলেও সেটি রাখা হয়নি। পরে সেই অতিরিক্ত অংশ ভাঙার নির্দেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
অভিযানের বিষয়ে রাজউকের উপ-পরিচালক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লিটন সরকার বলেন, এখানে রাজুকের অভিযান চলছে। ডিজাইন প্ল্যানের বাইরে অতিরিক্ত অংশ আমরা ভেঙে দিচ্ছি। অভিযুক্ত প্রত্যেকেরই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও মিটার জব্দ করা হয়েছে ডিপিডিসির মাধ্যমে। অভিযুক্তরা তাদের সংশোধন করে রাজউক চেয়ারম্যান মহোদয়ের অনুমতি নিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ লাগাতে পারবেন।
একই রোডের অনেক পুরোনো ভবনের সামনে জায়গা রাখা হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন— এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ঢাকাকে বাসযোগ্য করার জন্য নতুন যেসব ভবন হচ্ছে, সেসব ভবন যেন অতিরিক্ত জায়গা নিয়ে করতে না পারে আমরা সেই বিষয়টি এখন তদারকি করছি। আর যেসব ভবন অনেক আগেই হয়ে গেছে, তাদের কীভাবে আইনের আওতায় আনা যায় আমাদের নীতিমালার কাজ চলমান আছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত রাজউকের এই অভিযান চলছে ও চলবে।
অভিযানে অংশ নিয়েছেন রাজউকের অথরাইজড অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন, সহকারী অথরাইজড অফিসার মোহাম্মদ সাব্বিরুল ইসলাম ও ইমারত পরিদর্শক সুমন আহম্মেদ। এছাড়া দায়িত্ব প্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা এখানে উপস্থিত আছেন।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: