রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ : নতুন হুমকি দিলেন ট্রাম্প
প্রকাশিত:
১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:২৪
আপডেট:
২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:৪০

গত ৩ বছরের বেশি সময় ধরে চলতে থাকা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে মস্কো ও কিয়েভ যদি আন্তরিক না হয় এবং শিগগিরই যদি এ ইস্যুতে দৃশ্যমান কোনো উন্নতি না ঘটে, সেক্ষেত্রে যুদ্ধের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা থেকে সরে যাবে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ হুমকি দিয়েছেন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও প্যারিসে এক সম্মেলনে বলেছেন, যদি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি ফিরে আসার কোনো সম্ভাবনা না থাকে, সেক্ষেত্রে এ ইস্যুতে আর নিজেকে জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার সাংবাদিকরা মার্কিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ওভাল অফিসে এ প্রসঙ্গে ট্রাম্পের মতামত জানতে চান।
জবাবে ট্রাম্প বলেন, “তিনি (রুবিও) ভুল বলেননি। এখন কোনো কারণে দুই পক্ষের (রাশিয়া এবং ইউক্রেন) মধ্যে কোনো একটি যদি যুদ্ধাবসানের ব্যাপারটিকে জটিল করে তোলে, সেক্ষেত্রে আমরা প্রথমে ওই পক্ষকে বলব- ‘তোমরা নির্বোধ, তোমরা বোকার দল, তোমরা ভয়াবহ মানুষ’ এবং তারপর তাদের পাশ কাটিয়ে চলে যাব।”
“তবে আমরা আশা করছি যে এমন কিছু ঘটবে না এবং আমরা খুব শিগগিরই এটা শেষ করতে পারব।”
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়, সে সময় ট্রাম্প মন্তব্য করেছিলেন যে তিনি ক্ষমতায় থাকলে ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে’ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করে দিতে পারবেন।
পরে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে নির্বাচনে জয়ী হয়ে গত ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের পর তিনি বলেছিলেন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোকে অগ্রাধিকার দেবেন তিনি।
সেই অনুযায়ী চেষ্টাও করেছেন ট্রাম্প; ক্ষমতা গ্রহণের পরই ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা বন্ধ করেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন এবং গত মার্চে যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত একটি লিখিত প্রস্তাবনাও মস্কো এবং কিয়েভে পাঠিয়েছেন।
তবে তার সেই প্রস্তাবনা খারিজ করে দিয়েছে মস্কো। রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন থেকে জানানো হয়েছে, মূল যেসব ইস্যুর কারণে এই যুদ্ধ চলছে, প্রস্তাবনায় সেই বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
২০১৫ সালে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে স্বাক্ষরিত মিনস্ক চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে ইউক্রেনের স্বীকৃতির প্রদান না করা, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য ইউক্রেনের তদবির— প্রভৃতি নানা ইস্যুতে কয়েক বছর টানাপোড়েন চলার পর ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই অভিযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
অবশ্য এর আগেও ১ মার্চ নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা এক বার্তায় এই যুদ্ধের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা থেকে সরে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সেবার জেলেনস্কিকে ‘ভয় দেখানোর জন্য’ এ হুমকি দিয়েছিলেন তিনি।
সূত্র : এএফপি, এনডিটিভি অনলাইন
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: