গাজা দখলের সিদ্ধান্ত ইসরায়েলি জিম্মিদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেবে: হামাস
প্রকাশিত:
৮ আগস্ট ২০২৫ ২১:১৩
আপডেট:
৯ আগস্ট ২০২৫ ০০:২৮

গাজা শহরের দখলে নেওয়ার ইসরায়েলের পরিকল্পনাকে ‘যুদ্ধাপরাধ ও জাতিগত নির্মূলের প্রচেষ্টা’ বলে অভিহিত করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। একইসঙ্গে নেতানিয়াহুর এই সিদ্ধান্ত গাজায় বন্দী ইসরায়েলি জিম্মিদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেবে বলেও সতর্ক করেছে গোষ্ঠীটি।
শুক্রবার (০৮ আগস্ট) হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, দখলদার ইসরায়েল ‘দখল’ শব্দটির পরিবর্তে ‘নিয়ন্ত্রণ’ শব্দটি ব্যবহার করছে, যা নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর তাদের নৃশংস অপরাধের আইনি দায় এড়ানোর একটি প্রচেষ্টা।
ইসরায়েলি বাহিনীকে হুশিয়ারি দিয়ে হামাস বলছে, এটি কোনও ‘পিকনিক’ হবে না, এই অভিযানের জন্য তাদের ‘বড় মূল্য’ দিতে হবে।
নেতানিয়াহুর সরকার গাজায় বন্দী ইসরায়েলি জিম্মিদের প্রতি কোনো দায়িত্বশীল আচরণ করছে না অভিযোগ করে বিবৃতে আরও বলা হয়, ‘তারা (ইসরায়েল) ভালো করেই জানে গাজায় আগ্রাসন বৃদ্ধির অর্থ হবে জিম্মিদের বলিদান।’
হামাস জানিয়েছে, নেতানিয়াহুর এই পরিকল্পনাটি শেষ দফার আলোচনা থেকে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের আকস্মিক প্রত্যাহারের ব্যাখ্যা দেয়, যেখানে উভয় পক্ষই যুদ্ধবিরতি এবং বন্দী বিনিময় চুক্তিতে পৌঁছানোর দ্বারপ্রান্তে ছিল।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা পুনর্ব্যক্ত করছি যে, মিশরীয় এবং কাতারি মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনায় যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সকল নমনীয়তা এবং ইতিবাচকতা দেখিয়েছিলাম।’
এরআগে গাজা শহর দখলের নেওয়ার জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পরিকল্পনায় অনুমোদন করেছে দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহুর ‘হামাসকে পরাজিত করার প্রস্তাব’ নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। এছাড়া, যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে বেসামরিক মানুষের জন্য মানবিক সহায়তা প্রদানেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, হামাসের সাথে যুদ্ধ বন্ধ করার বিনিময়ে ইসরায়েল পাঁচটি প্রধান শর্ত দাবি করবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ, তাদের হাতে আটক বাকি ৫০ জন জিম্মিকে ফিরিয়ে আনা (যাদের মধ্যে ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে), গাজা উপত্যকাকে নিরস্ত্রীকরণ, সেখানে ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং হামাস বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নয় এমন একটি বিকল্প বেসামরিক সরকারের হাতে গাজার শাসনভার তুলে দেওয়া।
এদিকে ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাজ্য, সোদি আরব, তুরস্ক, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশ ও জাতিসংঘসহ মানবিক সংস্থাগুলো। এমনকি ইসরায়েলি সেনাপ্রধানও এই পরিকল্পনার বিরোধীতা করেছেন।
সূত্র: আলজাজিরা, আনাদোলু
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: