বৃহঃস্পতিবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৫, ১১ই বৈশাখ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


উন্নয়নের অংশীদার চীন, নতুন দিগন্তে বাংলাদেশ


প্রকাশিত:
২০ এপ্রিল ২০২৫ ১১:০২

আপডেট:
২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:২০

ছবি সংগৃহীত

গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী পূর্ণ হয়েছে। এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় দুটি দেশ একে অপরের পাশে থেকেছে, বন্ধুর মতো সহযোগিতা করেছে। এক সময়ের বৈরী সম্পর্ক আজ কৌশলগত অংশীদারিত্বে রূপ নিয়েছে। বর্তমানে, বাংলাদেশে চীনের ক্রমবর্ধমান বিশাল বিনিয়োগ উন্নয়নের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

বিশেষত, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত অতিরিক্ত শুল্কের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে চীনা বিনিয়োগ বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, চীন কীভাবে বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হয়ে উঠেছে এবং এর মাধ্যমে দেশের জন্য কী নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করা জরুরি।

১৯৪৯ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘ সময় পর্যন্ত বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) সাথে দেশটির আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়নি। স্নায়ুযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এবং চীনের সাথে পশ্চিমা বিশ্বের শীতল সম্পর্কের কারণে পরিস্থিতি জটিল ছিল। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় চীনের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। তারা পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করেছিল, যা বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে একটি নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে। তবে, সময়ের সাথে সাথে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ঘটে এবং চীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। ১৯৭৫ সালের ৪ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। এরপর থেকে ধীরে ধীরে সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করে এবং সহযোগিতা বৃদ্ধি পায়।

পাঁচ দশকে বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ক ক্রমশ দৃঢ় হয়েছে। অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, সাংস্কৃতিক এবং সামরিক প্রতিটি ক্ষেত্রেই সহযোগিতা সম্প্রসারিত হয়েছে। উভয় দেশই একে অপরের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেছে এবং আন্তর্জাতিক ফোরামে একে অপরের স্বার্থের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। ২০১৬ সালে চীনা রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের ঢাকা সফর দুই দেশের সম্পর্ককে ‘কৌশলগত অংশীদারিত্বে’ উন্নীত করে, যা সহযোগিতার একটি নতুন মাইলফলক স্থাপন করে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুৎ উৎপাদন, টেলিযোগাযোগ এবং শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে চীনা কোম্পানিগুলো বড় ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ, কর্ণফুলী টানেল, পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, এবং বিভিন্ন অর্থনৈতিক অঞ্চলে চীনের বিনিয়োগ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

চীনের এই বিনিয়োগ বাংলাদেশের জন্য একাধিক সুবিধা বয়ে এনেছে—

প্রথমত, এটি দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়ক হচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য।

দ্বিতীয়ত, নতুন নতুন শিল্প কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে, যা বেকার সমস্যা সমাধানে সহায়ক।

তৃতীয়ত, চীনের উন্নত প্রযুক্তি এবং অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের শিল্প খাতকে আধুনিকীকরণে সাহায্য করছে।

চতুর্থত, চীনের বিনিয়োগ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিতেও অবদান রাখছে।

বর্তমান বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিস্থিতিতে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগের গুরুত্ব আরও বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র চীনের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করার ফলে অনেক চীনা কোম্পানি তাদের উৎপাদন কেন্দ্র চীনের বাইরে স্থানান্তরিত করতে আগ্রহী হচ্ছে।

তুলনামূলকভাবে কম শ্রম খরচ এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের কারণে বাংলাদেশকে চীনা বিনিয়োগকারীরা আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে দেখছে। এই সুযোগটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি বাংলাদেশ সঠিকভাবে এই পরিস্থিতি কাজে লাগাতে পারে, তবে এটি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের একটি বড় কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে। এর ফলে দেশের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে এবং শিল্প খাতের বিকাশ দ্রুততর হবে। সরকার ইতিমধ্যে চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বরাদ্দ করেছে এবং বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।

উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনের সহযোগিতা বাংলাদেশের অগ্রগতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। অবকাঠামো উন্নয়নে চীনের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ, কর্ণফুলী টানেল, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মতো বৃহৎ প্রকল্পগুলো দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে, যা ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক।

বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নেও চীন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ অন্যান্য বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পে চীনা বিনিয়োগ দেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে সহায়ক হচ্ছে, যা শিল্প ও সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে উন্নত করছে। যোগাযোগ ও টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নে চীনা কোম্পানিগুলোর সহযোগিতা অনস্বীকার্য।

ফাইভ-জি প্রযুক্তি প্রবর্তন এবং ইন্টারনেট অবকাঠামো সম্প্রসারণের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন বাস্তবায়নে বাংলাদেশ আরও একধাপ এগিয়ে যাচ্ছে। শিল্প ও উৎপাদন খাতে চীনের বিনিয়োগ বৈচিত্র্য এনেছে। তৈরি পোশাকের পাশাপাশি চামড়া, ইলেকট্রনিক্স ও হালকা প্রকৌশল শিল্পের বিকাশে চীনা বিনিয়োগ রপ্তানি বহুমুখীকরণে সহায়ক।

প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও চীন বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার, সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কনফুসিয়াস সেন্টার স্থাপনের মাধ্যমে চীন শিক্ষা ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রেও সহযোগিতা সম্প্রসারিত করছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্যখাতেও চীনের বিনিয়োগের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে, যা এই খাতের উন্নয়নে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে। সামগ্রিকভাবে, চীনের এই বহুমুখী সহযোগিতা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ নিঃসন্দেহে উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করলেও, এর সাথে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জও বিদ্যমান। প্রথমত, চীনা বিনিয়োগের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ঋণের সাথে সম্পৃক্ত, যার ফলে বাংলাদেশকে ঋণের বোঝা এবং এর শর্তাবলী সম্পর্কে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিশোধের সক্ষমতা নিশ্চিত করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, কিছু চীনা প্রকল্পের গুণমান এবং পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ দেখা যায়, তাই সরকারকে অবশ্যই পরিবেশগত মান বজায় রাখা এবং প্রকল্পের গুণগত মান নিশ্চিত করার দিকে নজর দিতে হবে।

তৃতীয়ত, চীনা বিনিয়োগের কারণে স্থানীয় শিল্প ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, যার জন্য সরকারের এমন নীতি প্রণয়ন করা জরুরি যা দেশীয় শিল্পের বিকাশকে সুরক্ষা দেবে এবং বিদেশি বিনিয়োগকে তাদের জন্য হুমকি হিসেবে না দাঁড় করায়।

সবশেষে, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হওয়ায়, চীনের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে দেশের ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে অন্যান্য বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

দীর্ঘ অর্ধ শতাব্দীর পথপরিক্রমায় চীন আজ বাংলাদেশের উন্নয়নের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। একদা তিক্ততাপূর্ণ সম্পর্ক আজ কৌশলগত অংশীদারিত্বের দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত।

বর্তমানে বাংলাদেশে চীনের ব্যাপক বিনিয়োগ আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নতুন গতি সঞ্চার করেছে। বিশেষভাবে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত বাড়তি শুল্কের প্রেক্ষাপটে চীনা বিনিয়োগ বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য এক উজ্জ্বল সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে। তবে, এই সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে হলে বাংলাদেশকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে এবং সেগুলোর কার্যকর সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।

প্রথমত, চীনের কাছ থেকে আসা ঋণের শর্তাবলী এবং এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। বাংলাদেশকে এমন ঋণ গ্রহণ করতে হবে যা তার অর্থনৈতিক সক্ষমতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ এবং যা ভবিষ্যতের জন্য ঋণের ফাঁদ তৈরি না করে। ঋণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অত্যাবশ্যক।

দ্বিতীয়ত, পরিবেশগত সুরক্ষা এবং প্রকল্পের গুণমানের বিষয়ে কোনো আপস করা উচিত নয়। চীনা বিনিয়োগের সাথে সাথে পরিবেশের উপর যেন কোনো বিরূপ প্রভাব না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। একই সাথে, বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোর গুণমান আন্তর্জাতিক মানের হতে হবে, যাতে দীর্ঘমেয়াদে সেগুলো টেকসই উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।

তৃতীয়ত, স্থানীয় শিল্পের স্বার্থ রক্ষা করা জরুরি। চীনা বিনিয়োগের ফলে দেশীয় শিল্প যাতে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে না পড়ে, সে জন্য সহায়ক নীতি প্রণয়ন করতে হবে। দেশীয় উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং তাদের জন্য একটি সুষ্ঠু প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করা প্রয়োজন।

চতুর্থত, বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান অত্যন্ত সংবেদনশীল। চীনের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের পাশাপাশি অন্যান্য বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সাথে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা অপরিহার্য। জাতীয় স্বার্থকে সমুন্নত রেখে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করতে হবে।

পরিশেষে বলা যায়, চীন বাংলাদেশের উন্নয়নের এক বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করেছে। এই অংশীদারিত্বকে আরও ফলপ্রসূ করতে হলে বাংলাদেশকে বিচক্ষণতা, দূরদর্শিতা এবং কৌশলগত প্রজ্ঞা প্রদর্শন করতে হবে। যদি আমরা উপরোক্ত চ্যালেঞ্জগুলো সঠিকভাবে মোকাবিলা করতে পারি, তবে চীনা বিনিয়োগ নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে; যা স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে।

অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির এই পথে চীন এবং বাংলাদেশ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আরও দীর্ঘ পথ অতিক্রম করবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। এই সম্পর্ক পারস্পরিক বিশ্বাস, সম্মান ও সহযোগিতার ভিত্তিতে আরও সুদৃঢ় হোক।

ড. সুজিত কুমার দত্ত ।। অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
[email protected]


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top