আজানের বাক্যগুলো আগে পরে হয়ে গেলে করণীয়
প্রকাশিত:
২০ এপ্রিল ২০২৫ ১২:৪১
আপডেট:
২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:৩১

প্রতিদিন একজন মুসলিমের ওপর অবশ্য পালনীয় একটি বিধান হলো নামাজ। নামাজের জন্য আজান গুরুত্বপূর্ণ। পাঁচ ওয়াক্ত ও জুমার নামাজ আদায়ের জন্য পুরুষদের ওপর আজান দেওয়া ফরযে কিফায়া।
আজানের আভিধানিক অর্থ : কোনো জিনিস সম্পর্কে ঘোষণা দেওয়া। শরীয়তের পরিভাষায় আযান বলা হয়, ‘শরীয়ত কর্তৃক অনুমোদিত নির্দিষ্ট শব্দের মাধ্যমে সালাতের সময় সম্পর্কে ঘোষণা প্রদান করা।’
আজানের নাম এ জন্য আজান হয়েছে, যেহেতু মুয়াজ্জিন মানুষদেরকে নামাজের সময় জানিয়ে দেন ও তার ঘোষণা প্রদান করেন। আজানের আরেক নাম হচ্ছে ‘নিদা’ অর্থাৎ আহ্বান। কারণ, মুয়াজ্জিন সাহেব লোকদেরকে ডাকেন ও তাদেরকে নামাজের দিকে আহ্বান করেন।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
إِذَا نُودِيَ لِلصَّلَوٰةِ مِن يَوۡمِ ٱلۡجُمُعَةِ فَٱسۡعَوۡاْ إِلَىٰ ذِكۡرِ ٱللَّهِ
‘হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও।’ (সূরা আল-জুমু‘আ, আয়াত: ৯)
অপর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَإِذَا نَادَيۡتُمۡ إِلَى ٱلصَّلَوٰةِ ٱتَّخَذُوهَا هُزُوٗا وَلَعِبٗاۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمۡ قَوۡمٞ لَّا يَعۡقِلُونَ
‘আর যখন তোমরা সালাতের দিকে ডাক, তখন তারা একে উপহাস ও খেল-তামাশারূপে গ্রহণ করে। তা এই কারণে যে, তারা এমন কওম, যারা বুঝে না।’ (সুরা আল-মায়েদাহ, আয়াত : ৫৮)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‘যখন সালাতের সময় হয়, তখন তোমাদের একজন যেন আজান দেয় এবং তোমাদের মধ্যে বয়স্ক ব্যক্তি যেন তোমাদের ইমামতি করে।’ এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, আজান ফরযে কিফায়া।
ইবন তাইমিয়া রহ. বলেন, ‘মুতাওতির হাদীসে রয়েছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের জন্য আজান দেওয়া হতো, এটা উম্মতের ইজমা‘ এবং তাদের আমলের পরম্পরা দ্বারা প্রমাণিত।’ (শারহুল উমদা: ২/৯৬); ফাতওয়া ইবন তাইমিয়া: ২২/৬৪)
নির্দিষ্ট কিছু শব্দের মাধ্যমে আজান দেওয়া হয়। আজানের সময় এই শব্দগুলো বলারও নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। কেউ আজান দেওয়ার সময় যদি আজানের মাঝে বাক্যগুলো আগপিছ করে ফেলে তাহলে করণীয় কী?
আজান পুনরায় দিতে হবে নাকি দিতে হবে না? যেমন এক ব্যক্তি আজান দিতে গিয়ে ‘হাইয়্যা আলাস সালাহ’ এর আগেই ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ’ বলে ফেলেছে। এখন তার এই আজানের হুকুম কী হবে?
এ বিষয়ে ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদদের মতামত হলো— এক্ষেত্রে যেটিকে আগে বলেছে সেটি পুনরায় বললেই আজান শুদ্ধ হয়ে যাবে। নতুন করে আজান দিতে হবে না।
যেমন ‘হাইয়্যা আলাস সালাহ’ বলার পর আবার ‘হাইয়্যা আলাল ফালাহ’ বলবে। এতেই আজান শুদ্ধ হয়ে যাবে। পুনরায় আজান দিতে হবে না। (দুররুল মুহতার, ২/৫৬)
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: