দুধ-মাকে যাকাত দেওয়া যাবে?
প্রকাশিত:
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:১৬
আপডেট:
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:০৬

যাকাত বলতে ধন-সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ দান করাকে বোঝায়। পারিভাষিক অর্থে যাকাত হলো, নিসাবধারীর ধন-মাল, জমির ফসল ও খনিজ সম্পদের ওপর ইসলামি শরিয়ত নির্ধারিত অংশ নির্দিষ্ট খাতে ব্যয় করা।
যাকাত আদায়ে মানবজীবনে প্রভূত কল্যাণ আছে। জাকাতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার সম্পদ বৃদ্ধি করেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَمَاۤ اٰتَیۡتُمۡ مِّنۡ رِّبًا لِّیَرۡبُوَا۠ فِیۡۤ اَمۡوَالِ النَّاسِ فَلَا یَرۡبُوۡا عِنۡدَ اللّٰہِ ۚ وَمَاۤ اٰتَیۡتُمۡ مِّنۡ زَکٰوۃٍ تُرِیۡدُوۡنَ وَجۡہَ اللّٰہِ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُضۡعِفُوۡنَ
তোমরা যে সুদ দাও, যাতে তা মানুষের সম্পদে (যুক্ত হয়ে) বৃদ্ধি পায়, আল্লাহর কাছে তা বৃদ্ধি পায় না। পক্ষান্তরে আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানের উদ্দেশ্যে তোমরা যে যাকাত দিয়ে থাক, তো যারা তা দেয় তারাই (নিজেদের সম্পদ) কয়েক গুণ বৃদ্ধি করে নেয়। (সুরা রোম, আয়াত : ৩৯)
যারা নিয়মিত জাকাত আদায় করে আল্লাহ তায়ালা তাদের সম্পদকে বিভিন্ন ধরনের মুসিবত থেকে হেফাজত করেন। চোর ডাকাত ইত্যাদি থেকেও হেফাজত করেন। আর যারা জাকাত প্রদান করে না, আল্লাহ তায়ালা তাদের বিভিন্ন বিপদাপদ দিয়ে থাকেন।
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যারা জাকাত আদায় করবে না, আল্লাহ তায়ালা তাদের বিভিন্ন ধরনের মহামারিতে আক্রান্ত করবেন। ’ (তাবরানি, হাদিস : ৪৫৭৭)
যাকাতের মোট খাত আটটি। খাতগুলো হলো— এক. গরিব-ফকির— যাদের নেসাব পরিমাণ সম্পদ নেই। দুই. মিসকিন— যাদের কোনো সম্পদ নেই। তিন. ইসলামি রাষ্ট্রের সরকারকর্তৃক যাকাত, সদকা, ওশর ইত্যাদি উসুল করার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি।
চার. ইসলামের দিকে ধাবিত করার জন্য যাকাত দেওয়া। তবে এ খাতটি বর্তমানে আর প্রযোজ্য নয়। পাঁচ. নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের বিনিময়ে স্বাধীন হওয়ার চুক্তিতে আবদ্ধ দাস-দাসী। ছয়. পর্যাপ্ত পরিমাণ মাল না থাকার দরুণ ঋণ পরিশোধে অক্ষম ঋণী ব্যক্তি। সাত. যোদ্ধা, যারা যুদ্ধের অস্ত্র যোগাতে অক্ষম অথবা টাকার কারণে হজের কাজ পূর্ণ করতে অক্ষম বা ইলম হাসিল ও দ্বীনি দাওয়াতের কাজে নিয়োজিত গরিব মানুষ। আট. সফর অবস্থায় অভাবগ্রস্ত মানুষ।
কেউ যদি তার দুধ-মাকে যাকাত প্রদান করতে চান তাহলে তা জায়েজ হবে কি না? যেমন, অনেকে জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেন—
আমার দূর সম্পর্কের একজন চাচি আছেন। যিনি ছোটবেলায় আমাকে দুধ পান করিয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি বিধবা। আর্থিকভাবেও খুবই কষ্টে আছেন। তাই আমি তাকে যাকাতের টাকা দিয়ে সহায়তা করতে চাচ্ছি।
জানতে চাই, দুধ-মাকে কি যাকাতের টাকা দেওয়া যায়? তাকে কি আমি আমার যাকাতের টাকা দিতে পারব?
এর উত্তরে ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদেরা বলেন— দুধ-মাকে যাকাত দেওয়া জায়েয আছে। তাই দুধ-মা যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত হলে তাকে নিজের যাকাতের টাকা দেওয়া যাবে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: