ইসলামের দৃষ্টিতে অবিবাহিত থাকা কি হারাম?
প্রকাশিত:
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:১৫
আপডেট:
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:০৬

ইসলামের দৃষ্টিতে বিয়ে করা একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত এবং পবিত্র ও বরকতময় জীবনযাপনের মাধ্যম। তবে সবার জন্য বিয়ে করা বাধ্যতামূলক নয়। কেউ যদি অবিবাহিত থেকে পাপ থেকে বাঁচতে পারেন এবং বিয়ের প্রয়োজন বা আকাঙ্ক্ষা না থাকে, তবে তিনি অবিবাহিত থাকতে পারেন। তার জন্য অবিবাহিত থাকা হারাম নয়।
কানাডার অন্টারিওর ইসলামিক ইনস্টিটিউট অব টরন্টোর জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ও ইসলামি চিন্তাবিদ শায়খ আহমদ কুততি এক ফতোয়ায় এ তথ্য জানান।
বিয়ে কখন বাধ্যতামূলক?
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে—আর তোমরা তোমাদের মধ্যকার অবিবাহিত নারী-পুরুষ ও সৎকর্মশীল দাস দাসীদের বিবাহ দাও। তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী।। (সুরা আন-নূর, আয়াত :৩২)।
অর্থাৎ, কোরআনে বিয়ে করতে উৎসাহিত করা হয়েছে, কিন্তু বাধ্যতামূলক করা হয়নি। কেউ অবিবাহিত থেকে পাপে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকলে শুধু তখনই বিয়ে করা ফরজ।
অবিবাহিতরা নিকৃষ্ট’— একটি দুর্বল হাদিস
যে হাদিসে বলা হয়েছে, অবিবাহিতরা সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানুষ—তা দুর্বল ও অবিশ্বস্ত। রাসুলুল্লাহ (সা.) কখনো অবিবাহিত থাকার কারণে কাউকে নিন্দা করেননি।
পূর্ববর্তী নবীদের ইতিহাস থেকে জানা যায়, হজরত ঈসা (আ.) ও হজরত ইয়াহইয়া (আ.) পুরো জীবন অবিবাহিত থেকেছেন। তারা আল্লাহর নিকট সম্মানিত নবী ছিলেন। এমনকি ইমাম ইবনে জারির আত-তাবারি, ইমাম নববী ও শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াসহ অনেক বড় আলেম অবিবাহিত থেকে জ্ঞানচর্চা ও ইবাদতে জীবন উৎসর্গ করেছেন।
একজন ব্যক্তির মূল্যায়ন হয় তাকওয়া ও নিষ্ঠায়
রাসুলুল্লাহ (সা.) বিয়েকে উৎসাহিত করেছেন। তবে ইসলামে কোনো কিছু এমনভাবে বাধ্যতামূলক করা হয়নি, যা মানুষের জন্য কষ্ট বা সংকট ডেকে আনে।
যদি কোনো কারণে কারও জন্য বিয়ে করা বড় ধরনের মানসিক বা বাস্তবিক অসুবিধা তৈরি করে, তবে ঈমান ও পবিত্রতা রক্ষা সাপেক্ষে অবিবাহিত থাকা পাপ নয়।
মানুষ বিবাহিত না অবিবাহিত— আল্লাহ তায়ালা মানুষকে এ দুইয়ের ভিত্তিতে বিচার করবেন না, বরং তার অন্তরের নিষ্ঠা ও তাকওয়ার ভিত্তিতে বিচার করেন। পবিত্র থাকা, ঈমান রক্ষা করা ও আল্লাহর প্রতি সত্যনিষ্ঠ থাকা—এগুলোই প্রকৃত ইবাদত।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: