বৃহঃস্পতিবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৫, ১১ই বৈশাখ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


বাফুফের প্রধান অর্থ কর্মকর্তার পদত্যাগ


প্রকাশিত:
১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:৫২

আপডেট:
২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:১৩

ছবি সংগৃহীত

বাফুফের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) মো. সরফরাজ হাসান সিদ্দিকী পদত্যাগ করেছেন। বাফুফে তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করছে, যা কার্যকর হবে ১০ এপ্রিল থেকে। পদত্যাগপত্র গৃহীত হলেও দুই পক্ষের শর্ত অনুযায়ী আরও তিন মাস বাফুফেতে থাকবেন সরফরাজ। এই অর্ন্তবর্তী সময়ে তিনি মূলত দায়িত্ব হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকবেন।

বাফুফের ব্যাংকিং সংক্রান্ত বিষয়াবলি এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা ফিফা, এএফসি ও সাফের সঙ্গে সরফরাজের পরিবর্তে আর্থিক যোগাযোগ করবেন ফিন্যান্স বিভাগের আরেক কর্মকর্তা সৈয়দ আমিরুল। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার নির্বাহী কমিটির সকল কর্মকর্তাকে এক বার্তার মাধ্যমে বিষয়টি অবহিত করেছেন।

বাফুফের প্রশাসনিক প্রধান নির্বাহী সাধারণ সম্পাদক। তার পরেই অবস্থান প্রধান অর্থ কর্মকর্তার (সিএফও)। বিদেশি কোচিং স্টাফের বাইরে এই দুই প্রশাসনিক পদের জন্য বাফুফেকে মাসে প্রায় আট লাখ টাকা খরচ করতে হয়। গত কয়েক বছর ধরে বাফুফে প্রধান অর্থ কর্মকর্তাকে নিয়ে ভুগছে। ২০২৩ সালের ১৪ এপ্রিল সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে নিষিদ্ধ করে ফিফা। এরপর বাফুফে আর্থিক বিষয়াদি নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি করে। সেই তদন্ত কমিটির কাজের মধ্যেই জুন-জুলাই মাসে তৎকালীন প্রধান অর্থ কর্মকর্তা আবু হোসেন পদত্যাগ করেন। এর কয়েক মাস পরই সরফরাজ হাসানকে কাজী সালাউদ্দিন প্রধান অর্থ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেন।

বাফুফের আয়ের প্রধান খাত ফিফা ও এএফসির অনুদান। ফিফা-এএফসি বছরে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার দিলেও সেই অর্থ ব্যয়েরও নির্দেশনা দেয়। বিগত সময় বাফুফে সেই নির্দেশনা অমান্য করায় এর সঙ্গে জড়িত স্টাফরা নিষিদ্ধ ও জরিমানার শিকার হয়েছেন। সরফরাজ হাসান দায়িত্ব নেওয়ার পর ফিফা-এএফসির কমপ্ল্যায়ান্স অনুসরণ করেছেন কঠোরভাবে। সেটা অনুসরণ করলেও ফুটবল ও ফেডারেশন সংক্রান্ত অনেক কর্মকাণ্ডে অতিরিক্ত জটিলীকরণ প্রক্রিয়ার কারণে প্রায় সবার সঙ্গেই অনভ্যস্ততার ঘাটতি শুরু হয়। এর পাশাপাশি বাফুফের নির্বাহী কমিটির কর্মকর্তাদের অনেকেই প্রধান অর্থ কর্মকর্তার কমর্কাণ্ডে অসন্তুষ্ট ছিলেন বলে জানা গেছে। নির্বাহী ও ফিন্যান্স কমিটির সভায় একাধিকবার প্রধান অর্থ কর্মকর্তা নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলেন। সর্বশেষ ৯ এপ্রিল ফিন্যান্স কমিটির সভাতেও সিএফও’র কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ সকল কিছুর পরিপ্রেক্ষিতেই মূলত প্রধান অর্থ কর্মকর্তার পদত্যাগ বলে ধারণা বাফুফে সংশ্লিষ্ট সকলের।

২০০৮ সালে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক মাস পরই আবু হোসেনকে প্রধান অর্থ কর্মকর্তা করেন। সিএফও’র অতিরিক্ত ছুটি, আর্থিক ব্যবস্থাপনা অসঙ্গতি নিয়ে তিনি বিভিন্ন সময় আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে ছিলেন। এরপরও কাজী সালাউদ্দিন তার উপর আস্থাশীল ছিলেন। সোহাগ ফিফা থেকে নিষিদ্ধ হওয়ার পর বাফুফে তদন্ত কমিটি আবু হোসেনের দায় খুঁজে পায়। সেই তদন্ত প্রতিবেদনের আগেই তিনি পদত্যাগ করে চলে যান এবং সালাউদ্দিনও সেই পদত্যাগ গ্রহণ করে প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন। আবুর বিদায়ের পর তিনি সরফরাজকে নিয়োগ দেন। বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথ আউয়াল নিজেই ফিন্যান্স কমিটির প্রধান। তার অস্বস্তির জন্যই মূলত সিএফও’র বিদায় ঘটছে। তবে তাবিথের বাফুফের বিগত সময়ের আর্থিক দুর্নীতি বিষয় উদঘাটনে কোনো পদক্ষেপ এখনও দৃশ্যমান হয়নি।

বাফুফে বছরে ৫০-৬০ কোটি টাকা ব্যয় করে। মাসিক ব্যয় ৪-৫ কোটি। এই আয়-ব্যয়ের হিসাবের জন্য বাফুফের ফিন্যান্স সংক্রান্ত বিষয়ে সিএফও’র পেছনে প্রতি মাসে প্রায় চার লাখ টাকা ব্যয় করে। অথচ দেশের আরেক শীর্ষ ক্রীড়া সংগঠন বিসিবি বছরে ২০০ কোটি লেনদেন ও স্থায়ী আমানত হাজার কোটি টাকা হলেও নেই প্রধান অর্থ কর্মকর্তা। যদিও গঠনতন্ত্রে প্রধান অর্থ কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top