ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে মুসলিম দেশগুলো
প্রকাশিত:
১৮ আগস্ট ২০২৫ ১৫:১৪
আপডেট:
১৮ আগস্ট ২০২৫ ১৭:৪১

ইসরায়েলি গণহত্যা আর বর্বরতায় ফিলিস্তিনের অস্তিত্ব প্রায় নি:শেষ হওয়ার পথে। এর পরই ইসরায়েল থাবা বসাবে অন্য আরব দেশগুলোর ওপর।
আর এ কারণেই অবশেষে টনক নড়েছে আরব দেশগুলোর। ৩১টি মুসলিম দেশ এক যৌথ বিবৃতি জারি করে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর "বৃহত্তর ইসরায়েল" গঠনের পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছে।
বিবৃতিতে এই সম্প্রসারণবাদী নীতির বিপজ্জনক পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করার পাশাপাশি এটিকে আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি, আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং পশ্চিম এশিয়ায় সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধির ভয়ানক পদক্ষেপ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে যে নেতানিয়াহুর এ পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নীতির চরম লঙ্ঘন।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ২৩৩৪ নম্বর প্রস্তাব এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের মতামতের কথা স্মরণ করে দিয়ে, এই মুসলিম দেশগুলো সতর্ক করে দিয়েছে যে ফিলিস্তিনি ভূমি দখল, পশ্চিমতীর ও পূর্ব জেরুজালেমে বসতি সম্প্রসারণ এবং আল-আকসা মসজিদসহ ইসলামি ও খ্রিস্টান ধর্মের পবিত্র স্থানগুলোতে আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার ঘটনা এই অঞ্চলে সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।
আরব ও ইসলামী দেশগুলির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এবং আঞ্চলিক সংস্থাগুলি ইহুদিবাদী সরকারের অপরাধ, গণহত্যা, জাতিগত নির্মূল এবং গাজা অবরোধের নিন্দা জানিয়েছেন এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি বন্ধ এবং গাজার জনগণের জন্য মানবিক সহায়তার নিঃশর্ত প্রবেশাধিকারের আহ্বান জানিয়েছেন।
আরব লীগ, ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি এবং পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ বা পিজিসিসি দ্বারা সমর্থিত এই বিবৃতিটি ইহুদিবাদী ইসরায়েলের সম্প্রসারণবাদী নীতির বিরুদ্ধে অনেক বড় ঐক্যের প্রমাণ। এই বিবৃতিতে, "বৃহত্তর ইসরায়েল" গঠনের পরিকল্পনাকে আরব ও মুসলিম দেশগুলোর জাতীয় নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক ও বিশ্ব শান্তির জন্য সরাসরি হুমকি হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে, মুসলিম দেশগুলোর প্রতিনিধিরা জোর দিয়ে বলেছেন যে "বৃহত্তর ইসরায়েল" গঠন সম্পর্কে নেতানিয়াহুর বক্তব্য আন্তর্জাতিক আইন এবং জাতিসংঘের সনদের স্পষ্ট লঙ্ঘন। এই দেশগুলো আরো বলেছে, তারা শান্তিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চাইছে এবং নেতানিয়াহুর এই পরিকল্পনা কেবল ফিলিস্তিনের জন্যই হুমকি নয়, বরং সমগ্র পশ্চিম এশীয় অঞ্চল এবং এমনকি আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার জন্যও একটি গুরুতর বিপদ।
কট্টর ইহুদিবাদীরা, বিশেষ করে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, "বৃহত্তর ইসরায়েল" পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে, যা পশ্চিম এশিয়ার নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুতর হুমকি।
এর ধ্বংসাত্মক রাজনৈতিক ও সামরিক প্রভাব ছাড়াও, এই পরিকল্পনার ব্যাপক ভূ-রাজনৈতিক, মানবিক এবং সাংস্কৃতিক পরিণতিও রয়েছে। এই পরিকল্পনার উপর ভিত্তি করে, অধিকৃত ফিলিস্তিনের বাইরেও বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশের ভূমির মালিকানা দাবি করেছে ইসরায়েল।
এই পরিকল্পনার লক্ষ্য হল অধিকৃত অঞ্চলগুলোর সীমানা তাদের বর্তমান সীমার বাইরে প্রসারিত করা, যা এটিকে এই অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক হুমকিগুলির মধ্যে একটি করে তুলবে।
এই দাবিগুলোর উদ্দেশ্য জর্ডান, মিশর, সিরিয়া এবং লেবাননের মতো স্বাধীন দেশগুলোর সীমানা দখলের সমান, যা আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। চরমপন্থী ইহুদিবাদী ধারণার উপর ভিত্তি করে এই পরিকল্পনাটি এই অঞ্চলে সংঘাত বৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করবে।
তবে অনেক পর্যবেক্ষকের মতে, এই পরিকল্পনা অভ্যন্তরীণ সংকটের মুখে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকারও অন্যতম হাতিয়ার।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: