মিয়ানমারে নির্বাচনের আবহে বিমান অভিযান জান্তার, নিহত ৩৬
প্রকাশিত:
২০ আগস্ট ২০২৫ ১৫:৩১
আপডেট:
২০ আগস্ট ২০২৫ ১৮:০১

জান্তাশাসিত মিয়ানমারে নির্বাচনী আবহের মধ্যেই অভিযান চালিয়েছে দেশটির বিমান বাহিনী এবং এতে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩২ জন। মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাওয়াদি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে এ তথ্য।
মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ কায়াহ-এর মাউচি জেলায় চালানো হয়েছে এই অভিযান। এই প্রদেশটি ২০২৩ সালের নভেম্বরে সেনাবাহিনীকে হটিয়ে প্রদেশটির দখল নিয়েছে জান্তাবিরোধী শস্ত্র গোষ্ঠী কারেন্নি আর্মি। দখলের পর কায়াহ স্টেট ইন্টেরিয়াম এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল (কেআইইসি) নামে নতুন প্রাদেশিক সরকার গঠন করেছে কারেন্নি আর্মি।
কেআইইসি সূত্রে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে ৮ জন নারী, ১৮ জন পুরুষ এবং এবং ২ জন শিশু রয়েছে। বাকি ছয় জনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। নিহতদের পাশাপাশি ৫ জন আহতও হয়েছেন।
কেআইইসির সেকেন্ড সেক্রেটারি এবং দ্বিতীয় শীর্ষ নির্বাহী উ বানিয়ার ইরায়াদিকে বলেন, “মাউচিতে একাধিক খনি আছে। তাই নিয়মিত এই জেলায় লোকসমাগম হয়; অনেকে খনির কাজ করতে আসে, অনেকে আসে খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করতে। জান্তা এই জেলার সামাজিক অর্থনৈতিক জীবন ধ্বংস করতে চাইছে এবং মানুষজনকে ভীতির মধ্যে রাখতে চাইছে।”
উ বানিয়ার জানান, চলতি ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত কায়াহ-এর বিভিন্ন জেলায় ১৪ বার বিমান হামলা চালিয়েছে জান্তা, তবে মঙ্গলবারের হামলাটি ছিল আগের সব হামলার চেয়ে অনেক বেশি ভয়াবহ এবং প্রাণঘাতী। কারণ এর আগের ১৪ হামলায় মোট নিহত হয়েছিলেন ১১ জন।
এ ইস্যুতে আরও তথ্য জানার জন্য জান্তার মুখপাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল ইরাওয়াদি, কিন্তু কোনো মুখপাত্র মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সর্বশেষ এই হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের কাছে জান্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের নালিশ জানিয়েছে কেআইইসি।
২০২০ সালের জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের জাতীয় ক্ষমতা দখল করে জান্তা। সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং এ অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেন। অভ্যুত্থানের পর গঠিত সামরিক সরকারের প্রধানও হন তিনি।
অভ্যুত্থানের পরপরই গ্রেপ্তার করা হয় মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচি এবং তার নেতৃত্বাধীন সরকারকে। সুচি এবং তার রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)-এর অধিকাংশ মন্ত্রি, এমপি এবং দলটির বিভিন্ন স্তরের হাজার হাজার নেতাকর্মী বর্তমানে কারাবন্দি আছেন। গত বছর দলটির নিবন্ধনও বাতিল করেছে জান্তা নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন কমিশন।
ক্ষমতা দখলের পর সম্প্রতি প্রথমবারের মতো মিয়ানমারে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে জান্তা। আগামী ২৮ ডিসেম্বর হবে সেই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।
এসএন/রুপা
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: