বিবিএসের প্রতিবেদন
সন্ধ্যার পর বাড়িতেও নিরাপদ বোধ করেন না প্রায় ৮ শতাংশ মানুষ
প্রকাশিত:
১৯ জুন ২০২৫ ২০:০৭
আপডেট:
১৯ জুন ২০২৫ ২৩:৪৬

নিজ এলাকায় সন্ধ্যার পর ১৫ শতাংশের বেশি মানুষ নিরাপদ বোধ করেন না বলে উঠে এসেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক প্রতিবেদনে। এ ছাড়া প্রায় সাড়ে ৭ শতাংশ মানুষ নিজ বাড়িতে নিরাপদ বোধ করেন না বলেও উঠে এসেছে ওই প্রতিবেদনে।
আজ (বৃহস্পতিবার) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ‘সিটিজেন পারসেপশন সার্ভে (সিপিএস)’ রিপোর্ট প্রকাশ করে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ৬৪ জেলার ১ হাজার ৯২০টি প্রাইমারি স্যাম্পলিং ইউনিট থেকে ৪৫ হাজার ৮৮৮টি খানার ১৮ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী মোট ৮৪ হাজার ৮০৭ জন নারী-পুরুষ উত্তরদাতার সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। জরিপে নাগরিকদের দৃষ্টিভঙ্গি ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নিরাপত্তা, সুশাসন, সরকারি সেবার মান, দুর্নীতি, ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার এবং বৈষম্য বিষয়ক এসডিজি ১৬ এর ছয়টি সূচকের অগ্রগতি মূল্যায়ন করা হয়েছে। জরিপের প্রশ্নপত্র জাতিসংঘ থেকে নির্ধারিত আন্তর্জাতিক মান ও পদ্ধতি অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে।
বিবিএস জানায়, দেশের নিজ এলাকায় ৮৪.৮১ শতাংশ নাগরিক সন্ধ্যার পর নিজ এলাকার আশপাশে একা চলাফেরা করতে নিরাপদ বোধ করেন। এই হার পুরুষদের মধ্যে ৮৯.৫৩ শতাংশ ও নারীদের মধ্যে ৮০.৬৭ শতাংশ। শহরাঞ্চলের নাগরিকদের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ (৮৩.৭৫ শতাংশ) গ্রামীণ এলাকার নাগরিকদের তুলনায় কিছুটা কম (৮৫.৩০ শতাংশ) দেখা গেছে। অপরদিকে সন্ধ্যার পর নিজ বাড়িতে নাগরিকদের নিরাপত্তাবোধের হার ৯২.৫৪ শতাংশ, যা নারীর ক্ষেত্রে ৯১.৮২ শতাংশ ও পুরুষের ক্ষেত্রে ৯৩.৩৫ শতাংশ।
বিবিএস জানায়, রাজনৈতিক প্রভাব বিষয়ের ক্ষেত্রে ২৭.২৪ শতাংশ নাগরিক মনে করেন যে, তারা দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় সরকারের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে মতামত প্রকাশ করতে পারেন। এক্ষেত্রে শহর (২৭.৮৭ শতাংশ) ও গ্রামের (২৬.৯৪ শতাশ) মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য না থাকলেও লিঙ্গভিত্তিক পার্থক্য রয়েছে। এই হার পুরুষের ক্ষেত্রে ৩১.৮৬ শতাংশ এবং নারীর ক্ষেত্রে ২৩.০২ শতাংশ। অনুরুপভাবে ২১.৯৯ শতাংশ নাগরিক মনে করেন যে, তারা দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে পারেন। এই হার নারীর ক্ষেত্রে ১৭.৮১ শতাংশ ও পুরুষের ক্ষেত্রে ২৬.৫৫ শতাংশ।
সরকারি স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, ৪৭.১২ শতাংশ নাগরিক গত ১ বছরের মধ্যে অন্তত এক বার সরকারি স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা গ্রহণ করেছেন। সেবা গ্রহণকারীদের মধ্যে ৮২.৭২ শতাংশ নাগরিকের মতে উক্ত স্বাস্থ্যসেবা সহজে প্রাপ্তিযোগ্য এবং স্বাস্থ্যসেবার খরচ সামর্থের মধ্যে ছিল।
শিক্ষা ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, ৪০.৯৩ শতাংশ নাগরিকের কমপক্ষে একটি শিশু সরকারি প্রাথমিক-মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেন। এর মধ্যে ৯৬.৪৬ শতাংশ নাগরিক প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহজে প্রবেশযোগ্য হচ্ছে। যে কোনো ধরনের যানবাহনে বা পায়ে হেঁটে ৩০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছানো যায়।
অন্যান্য সরকারি সেবার মধ্যে পরিচয়পত্র/নাগরিক নিবন্ধনের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, সেবা গ্রহণকারীদের মধ্যে ৭৮.১২ শতাংশ সেবার প্রাপ্যতা ও ৮৬ শতাংশ সেবাপ্রাপ্তি ব্যয় সামর্থের মধ্যে ছিল বলে মনে করেন। গত দুই বছরে ১৬.১৬ শতাংশ নাগরিক কোনো না কোনো বিবাদ বা বিরোধের মুখোমুখি হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৮৩.৬০ শতাংশ নাগরিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আনুষ্ঠানিক অথবা অনানুষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থায় প্রবেশাধিকার পেয়েছেন। এর মধ্যে ৪১.৩৪ শতাংশ আনুষ্ঠানিক যেমন: আদালত, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সেবা পেয়েছেন। ৬৮.৯৬ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক যেমন: কমিউনিটি নেতা, আইনজীবী ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সেবা পেয়েছেন।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: