শুক্রবার, ১৫ই আগস্ট ২০২৫, ৩০শে শ্রাবণ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


সালাউদ্দিন পাবেন ৩৫ হাজার, সোহাগ ৫ লাখ


প্রকাশিত:
৪ মে ২০২৩ ১৯:০৯

আপডেট:
১৫ আগস্ট ২০২৫ ০০:৩১

 ফাইল ছবি

আর্থিক বিষয়াদি নিয়ে হর-হামেশাই খবরের শিরোনাম হয় বাফুফে। ২০২১ সালে বাফুফের আর্থিক রিপোর্টের ঋণ খাতে দেখা গেছে বিস্ময়কর তথ্য। বাফুফেতে যারা চাকরি করেন তাদের মধ্যে তিন জন ফেডারেশনকে ধার দিয়েছেন প্রায় ১৬ লাখ টাকা। অথচ সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের ধার দেখানো হয়েছে মাত্র ৩৫ হাজার টাকা

২০২২ সালে সর্বশেষ বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই সভায় ২০২১ সালের অডিট রিপোর্ট অনুমোদিত হয়েছে। সেই অডিট রিপোর্টে বাফুফের দেনা দেখানো হয়েছে ৩ কোটি ৩৩ লাখ ৭৬ হাজার ৬৯৯ টাকা। ২০২১ সাল শুরু হয়েছিল ৩ কোটি ২৭ লাখ ১৪ হাজার ৯৭৩ টাকা নিয়ে। ২০২১ সালে অতিরিক্ত দেনা যোগ হয়েছে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ। সেই সাড়ে ছয় লাখের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগের পাওনা ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৭২৫ টাকা, প্রধান অর্থ কর্মকর্তার দেড় লাখ টাকা ও সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের ৩৫ হাজার টাকা।

২০২১ সালে বেতনভুক্ত সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ ফেডারেশনকে ধার দিয়েছিলেন ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৭২৫ টাকা। ঐ বছরের মধ্যে ২ লাখ টাকা ফেরত নেন। প্রধান অর্থ কর্মকর্তা আবু হোসেন ধার দিয়েছিলেন সোহাগের চেয়ে বেশি। ৭ লাখ ৯৯ হাজার টাকা ধার দিয়ে ৬ লাখ ৪৯ হাজার টাকা ফেরত নেন প্রধান অর্থ কর্মকর্তা। অর্থ বিভাগে চাকুরিরত আরেকজন এক্সিকিউটিভ অনুপম হোসেনও ধার দিয়েছিলেন। তার দেয়া ৫১ হাজার ৫০০ টাকা অবশ্য ঐ বছরেই আবার ফেরত নিয়ে নেন।

গত বছর শতাধিক কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে অডিট রিপোর্ট অনুমোদিত হয়েছে। নির্বাহী কমিটি, কাউন্সিলরদের চোখে বিষয়টি এত দিন সেভাবে ধরা পড়েনি। গত পরশু বাফুফের নির্বাহী কমিটির সভায় বেতনভুক্ত স্টাফদের ফেডারেশনে ধার দেয়ার বিষয়টি আলোচিত হয়। নির্বাহী কমিটিতে অনেক সামর্থ্যবান ব্যক্তিবর্গ থাকা সত্ত্বেও স্টাফরা ফেডারেশনে টাকা ধার দেয়ায় বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে সভাপতির ধার মাত্র ৩৫ হাজার আর দুই স্টাফের ধার সেখানে প্রায় ১৬ লাখ টাকা। যা বিব্রত করেছে কমিটির অনেককেই।

বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের ধার ২০২১ সালে মাত্র ৩৫ হাজার হলেও বিগত বছরগুলোর আর্থিক রিপোর্টে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত ধার দেখানো হয়েছে। সালাউদ্দিনের মন্তব্য, তিনি ফেডারেশনে বছরে বেশ কয়েক বারই ব্যক্তিগতভাবে ধার দেন। সালাউদ্দিন ব্যক্তিগতভাবে অর্থ দিলেও অনেক সময় তার টাকাগুলো অডিটে সেভাবে দেখানো হয় না বলে দাবি ফেডারেশনের অনেক কর্মকর্তার। ফলে এখানে স্বচ্ছতার প্রশ্ন উঠে যায়। তবে এ নিয়ে আগে কখনো কথা হয়নি, এবারই প্রথম আলোচনা হওয়ায় বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন বাফুফে সভাপতি, 'সভায় এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই বিষয়টি নিয়ে সামনে কাজ করবে।' স্টাফদের ধার দেয়া নিয়ে সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুর্শেদী কোনো মন্তব্য করেননি।

ফেডারেশনে ধার দেয়ার কারণ সম্পর্কে স্টাফদের বক্তব্য, ফুটবলকে ভালোবেসেই তারা এই ধার দিয়েছিলেন এবং অনেক ক্ষেত্রে চেক সাইনিং কতৃপক্ষরা উপযুক্ত সময়ে থাকেন না, তখন কাজ চালিয়ে নিতে ধার দেন। গত পরশুর সভায় স্টাফদের ফেডারেশনকে ধার না নেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয় বলা জানা গেছে। চাকরি করে ফেডারেশনে ধার দেয়া এই তিন কর্মকর্তাই ফিফার শোকজ পেয়েছিলেন। এর মধ্যে সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ ফিফা থেকে নিষিদ্ধ।

বাফুফের প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা লোনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ পাবেন সাবেক সহ-সভাপতি তাবিথ এম আউয়াল। তিনি একাই প্রায় দুই কোটি টাকার মতো পাবেন। আরেক সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ পাবেন ৮৪ লাখ টাকা। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের সভাপতি মঞ্জুর কাদের জেলা ফুটবলের জন্য দিয়েছিলেন ৬২ লাখ টাকা। সেই টাকা এখনো ধার হিসেবেই বয়ে বেড়াচ্ছে ফেডারেশন। জাতীয় দলের ম্যানেজার ইকবাল হোসেন পাবেন ৫ লাখ টাকা। এই চার জনের ধার বেশ কয়েক বছর ধরেই বয়ে বেড়াচ্ছে ফেডারেশন। এই গুলোর সঙ্গে ২০২১ সালে সোহাগ, আবু, অনুপম ও সালাউদ্দিনের দেয়া অর্থ সাময়িক ধার হিসেবে দেখানো হয়েছে।

তাবিথ আউয়াল ফেডারেশনের কাছে কয়েক দফা তার টাকা ফেরত চেয়েছেন। গত ফেব্রুয়ারিতেও তিনি ফেডারেশনকে টাকা চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। ফেডারেশন তাবিথের অর্থ ফেরত দিতে পারেনি। তবে আরেক সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ ফেডারেশনের কাছে তার পাওনা অর্থ কখনও ফেরত চাননি।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top