কী দেখে নতুন ফোন কিনবেন?
প্রকাশিত:
১১ মে ২০২৫ ১২:৪০
আপডেট:
১২ মে ২০২৫ ০৪:৫৭

আজকের যুগে স্মার্টফোন শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি আমাদের প্রতিদিনের জীবনের অপরিহার্য অংশ। অফিসের কাজ হোক বা পড়াশোনা, ছবি তোলা হোক বা অনলাইন কেনাকাটা— সবকিছুতেই স্মার্টফোন নির্ভরতা বেড়েই চলেছে। তাই নতুন ফোন কেনার সময় শুধু দাম নয়, বিবেচনা করতে হয় আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিক।
বিশেষজ্ঞ ও প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, একটি ভালো স্মার্টফোন কিনতে নিচের বিষয়গুলো অবশ্যই খেয়াল রাখা উচিত-
১. প্রসেসর ও র্যাম (RAM & Processor)
ফোনের গতি ও পারফরম্যান্স নির্ভর করে এর প্রসেসর ও র্যামের উপর। যারা গেম খেলেন বা একসঙ্গে একাধিক অ্যাপ চালান, তাদের জন্য অন্তত ৬ জিবি র্যাম ও মিড-রেঞ্জ বা হাই-এন্ড প্রসেসর (যেমন Snapdragon 6/7/8 সিরিজ, MediaTek Dimensity সিরিজ) দরকার।
২. ব্যাটারির ক্ষমতা ও চার্জিং সুবিধা
সারাদিন ফোন ব্যবহারের জন্য দরকার শক্তিশালী ব্যাটারি। ৫০০০ এমএএইচ বা তার বেশি ব্যাটারি সুবিধাজনক। ফাস্ট চার্জিং সুবিধা থাকলে খুব দ্রুত ফোন চার্জ হয়ে যায়, যা কর্মব্যস্ত জীবনে দারুণ উপকারী।
৩. ক্যামেরার গুণমান
অনেকে ক্যামেরা ফিচারের দিকে বেশি গুরুত্ব দেন। তবে শুধু মেগাপিক্সেল দেখে নয়— ক্যামেরার অ্যাপারচার, সেন্সর, লেন্স এবং সফটওয়্যার প্রসেসিং-ও বিবেচনায় রাখতে হবে। যারা কনটেন্ট ক্রিয়েটর বা ভিডিও বানান, তাদের জন্য ওআইএস (অপটিক্যাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন) একটি দরকারি ফিচার।
৪. ডিসপ্লে ও রেজল্যুশন
ভালো মানের ডিসপ্লে চোখের জন্য আরামদায়ক ও ভিডিও দেখার অভিজ্ঞতা উন্নত করে। AMOLED বা OLED ডিসপ্লে, ফুল HD+ রেজল্যুশন এবং 90Hz বা 120Hz রিফ্রেশ রেট থাকলে সেটি আরও ভালো।
৫. স্টোরেজ ও এক্সপান্ডেবিলিটি
ফোনে কতটা ফাইল, অ্যাপ বা ছবি রাখতে পারবেন তা নির্ভর করে স্টোরেজের উপর। ১২৮ জিবি এখন ন্যূনতম স্ট্যান্ডার্ড হলেও, যারা ভিডিও বা বড় ফাইল সংরক্ষণ করেন তাদের জন্য ২৫৬ জিবি বা এক্সটারনাল মেমোরি সুবিধা গুরুত্বপূর্ণ।
৬. অপারেটিং সিস্টেম ও সফটওয়্যার আপডেট
অ্যানড্রয়েড ফোনে নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট ও সিকিউরিটি প্যাচ দেওয়া হয় কি না, তা দেখে নিতে হবে। অনেক কোম্পানি ২-৩ বছর পর্যন্ত সফটওয়্যার সাপোর্ট দেয়, যা ফোনটিকে দীর্ঘদিন পর্যন্ত আপডেটেড রাখে।
৭. ব্র্যান্ড, বিক্রয়োত্তর সেবা ও গ্যারান্টি
ভালো ব্র্যান্ডের ফোন শুধু মানেই নয়, তার সঙ্গে আসে নির্ভরযোগ্য ওয়ারেন্টি ও সার্ভিস সেন্টারের সুবিধা। তাই ব্র্যান্ডের বিশ্বাসযোগ্যতা ও নিকটবর্তী সার্ভিস সেন্টারের অবস্থান জেনে নেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ।
৮. দাম ও ব্যবহারকারীর প্রয়োজন
সবশেষে, নিজের প্রয়োজন ও বাজেট অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়াটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যারা কেবল সাধারণ ব্যবহার করেন, তাদের জন্য হাই-এন্ড ফোন না কিনলেও চলে। কিন্তু যারা ফটোগ্রাফি, ভিডিও এডিটিং বা গেমিং করেন, তাদের জন্য নির্দিষ্ট ফিচারের প্রয়োজন হতে পারে।
নতুন ফোন কেনা একটি বিনিয়োগের মতো। ভুল সিদ্ধান্তে আপনার টাকা অপচয় হতে পারে। তাই শুধু ব্র্যান্ড দেখে নয়, নিজের প্রয়োজন ও ব্যবহার অনুযায়ী ফিচার যাচাই করে তবেই ফোন কেনা উচিত।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: