শনিবার, ১০ই মে ২০২৫, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


‘পদ্মা সেতু দিয়ে মোটরসাইকেলে বাড়ি যাওয়া, ঈদের আগে আরেক ঈদ’


প্রকাশিত:
২০ এপ্রিল ২০২৩ ২১:০৬

আপডেট:
১০ মে ২০২৫ ০৩:৩৪

ছবি সংগৃহিত

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে দীর্ঘ ৯ মাস ২৪ দিন পর পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) সকাল থেকে পদ্মা সেতু উত্তর টোলপ্লাজায় হাজারো মোটরসাইকেল আরোহীর ভিড় দেখা যায়।

ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে স্ত্রী ও এক বাচ্চাকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে এসেছেন মোহাম্মদ সোহেল। পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে ঈদ করতে বরিশালের গৌরনদী এলাকায় যাবেন তিনি।

মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ঈদের আগেই আমাদের ঈদের খুশি শুরু হয়ে গেছে। এ যেন আরেক ঈদ গতকাল সারা রাত ঘুমায়নি। কখন সকাল হবে, পদ্মা সেতু দিযে বাড়ি যাব। ভোরে মাওয়া এসেছি। টোলপ্লাজায় এসেই অল্প সময়ের মধ্যে সেতুতে উঠার সুযোগ পেয়েছি। এই প্রথম সড়কপথে কোনো ভোগান্তি ছাড়া বাড়ি যাচ্ছি। কতটা খুশি লাগছে ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।

শুধু সোহেল নয় পদ্মা সেতু দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে যাতায়াত করা প্রত্যেকটি মোটরসাইকেল আরোহীর চোখে-মুখে এমন খুশি দেখা যায়। পদ্মা সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল পারাপার শুরু হওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে সবার মধ্যে।

বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটের দিকে টোল আদায় করে পদ্মা সেতু পাড়ি দেওয়ার সুযোগ করা হয় মোটরসাইকেল আরোহীদের। তবে এদিন সেহরি খাওয়ার পর থেকেই মাওয়া টোলপ্লাজা এলাকায় জড়ো হতে থাকেন মোটরসাইকেল আরোহীরা। ভোরের আলো ফোটার আগেই পদ্মা সেতুর উত্তর থানা থেকে টোলপ্লাজা পর্যন্ত মোটরসাইকেল আরোহীদের দীর্ঘ সারি লেগে যায়। প্রথমে একটি বুথ দিয়ে টোল আদায় করা হচ্ছিল। মোটরসাইকেলের চাপ থাকায় পরবর্তীতে দুটি বুথের মাধ্যমে টোল আদায় করা হয়।

পদ্মা উত্তর থানা এলাকায় দেখা যায়, মোটরসাইকেলের দীর্ঘ সারি। একটু একটু করে মোটরসাইকেলগুলো মাওয়া টোলপ্লাজার দিকে এগোচ্ছিল। মোটরসাইকেল আরোহীদের বিভিন্ন ধরনের দিকনির্দেশনা দিচ্ছিলেন পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। এ সময় যাত্রীদের অনেকে পুলিশকে হাসিমুখে সালাম দিচ্ছিলেন। পুলিশও তাদেরকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছিলেন। মোটরসাইকেল আরোহীদের হেলমেট এবং টোলের ১০০ টাকা হাতে রাখার জন্য অনুরোধ করছিলেন।

রাজধানীর ডেলটা মেডিকেল কলেজের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. শাকিল। তিনি খুলনা যাবেন। শাকিল বলেন, পরিবারের সঙ্গে ঈদ করবো। ভোরে নামাজ শেষে ঢাকা থেকে রওনা হয়েছি। অল্প সময়ের মধ্যে মাওয়া চলে এসেছি। পদ্মা সেতুতে বাইক পারাপার শুরু না হলে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হতো। মানিকগঞ্জ দিয়ে ঘুরে খুলনায় যেতে হতো। পদ্মা সেতু দিয়ে এখন খুব সহজেই অল্প সময়ের মধ্যে গ্রামের বাড়িতে যাব। সেখানে ঈদ করবো। এর চেয়ে বেশি খুশি আর কিছুই হতে পারে না।

টোলপ্লাজার সামনে কথা হয় বরিশালের গৌরনদী এলাকার বাসিন্দা তামান্না আক্তারের সঙ্গে। তিনি তার স্বামীর সঙ্গে রাজধানীর মিরপুর থেকে এসেছেন। তামান্না বলেন, মোটরসাইকেলে চড়ে এটিই প্রথম আমার বাড়ি যাওয়া। মোটরসাইকেল চলাচল শুরু হওয়ায় আমরা খুব খুশি। আমরা চাই দুয়েকজনের ভুলে যেন আবারো পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ হয়ে না যায়।

পদ্মা উত্তর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, আজ ভোরের আলো ফোটার আগেই মোটরসাইকেল আরোহীরা সেতু এলাকায় আসতে থাকেন। সেসময় পদ্মা উত্তর থানা থেকে সেতুর টোলপ্লাজা পর্যন্ত ২০০ মিটার এলাকায় মোটরসাইকেলের দীর্ঘ সারি ছিল। মোটরসাইকেল আরোহীরা নিয়ম মেনে টোল পরিশোধ করেন। ভোরে চাপ থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চাপ কমতে থাকে।

পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ রজ্জব আলী জানান, যানবাহন আসা মাত্র টোল পরিশোধ করে সেতু পারি দিতে পারছে। কোথাও কোনো চাপ নেই। সকাল ৯টা পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি মোটরসাইকেল পদ্মা সেতু দিয়ে পারাপার হয়েছে। সকালের দিকে মোটরসাইকেলের অনেক চাপ ছিল। তখন দুইটি বুথের মাধ্যমে টোল আদায় করা। সকাল ৮টার পর চাপ কমতে থাকে। তখন থেকে আবার একটি বুথ দিয়ে টোল আদায় করা হচ্ছে। যদি আবারও চাপ বাড়ে সেক্ষেত্রে দুটি বুথ দিয়ে টোল আদায় করা হবে।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top