অভিনয় ছাড়া কিছু জানি না, পারি না: রাজ্জাক
প্রকাশিত:
২১ আগস্ট ২০২৫ ১১:১৮
আপডেট:
২১ আগস্ট ২০২৫ ১১:২৯

বাংলা চলচ্চিত্রকে যদি রাজ্য ধরা হয়, তাহলে সেই রাজ্যের রাজা ছিলেন নায়ক রাজ্জাক। আর এ কারণেই জীবদ্দশায় তিনি পেয়েছিলেন ‘নায়করাজ’ উপাধি। তিনি বাংলার নায়ক রাজ। সেলুলয়েডের ফিতায় রাজ রাজ্জাকের অসংখ্য চরিত্র অমর হয়ে আছে দর্শকের হৃদয়ে।
১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি ভারতের কলকাতার একটি অভিজাত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। চলচ্চিত্র অঙ্গনে রাজ্জাক নামে পরিচিত হলেও তাঁর পুরো নাম আব্দুর রাজ্জাক।
কলকাতার থিয়েটারে অভিনয়ের মাধ্যমে শোবিজ অঙ্গনে যাত্রা শুরু করেন। সিনেমার নায়ক হওয়ার অদম্য স্বপ্ন ও ইচ্ছা নিয়ে রাজ্জাক ১৯৫৯ সালে ভারতের মুম্বাইয়ের ফিল্মালয়তে সিনেমার ওপর পড়াশুনা ও ডিপ্লোমা করেন। এরপর কলকাতায় ফিরে এসে শিলালিপি ও আরও একটি সিনেমায় অভিনয় করেন।
১৯৬৪ সালে কলকাতায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কবলে রাজ্জাক তাঁর পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে আসতে বাধ্য হন। ঢাকায় এসেও নায়ক হওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকেন। তবে অভিনয়ে সুযোগ না ‘উজালা’ ছবিতে পরিচালক কামাল আহমেদের সহকারি হিসেবে কাজ করেন।
৬০-এর দশকে সালাউদ্দিন পরিচালিত ছবি ‘তেরো নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’-এ একটি পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ঢালিউড সিনেমায় আন্তপ্রকাশ করেন। এরপর জহির রায়হান পরিচালিত ‘বেহুলা’ছবিতে লখিন্দরের চরিত্রে অভিনয় দিয়ে নায়ক হিসেবে আন্তপ্রকাশ করেন। এ ছবিতে অভিনেত্রী সুচন্দার বিপরীতে নায়ক হিসেবে অভিনয় করে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেন নায়ক রাজ রাজ্জাক। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
৭০ ও ৮০-এর দশকে রাজ্জাক তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। দীর্ঘ পাঁচ দশকের বেশি সময় অভিনয় জীবনে ৩০০ এরও বেশি সিনেমায় নায়কের ভূমিকায় দেখা গেছে। তাঁর উল্লেখযোগ্য ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘নীল আকাশের নীচে, ময়নামতি, মধু মিলন, পীচ ঢালা পথ, যে আগুনে পুড়ি, জীবন থেকে নেয়া, কী যে করি, অবুঝ মন, রংবাজ, বেঈমান, আলোর মিছিল, অশিক্ষিত, অনন্ত প্রেম, বাদী থেকে বেগম ইত্যাদি।
বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়করাজ রাজ্জাক বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের সম্পর্কে বলছিলেন, ‘আমার প্রেম, আমার ভালোবাসা, আমার সবকিছু অভিনয় আর চলচ্চিত্র। এ ছাড়া আমি আর কিছু জানি না, পারি না। আল্লাহ আমাকে অনেক সুযোগ দিয়েছেন। অনেক কিছু করতে পারতাম। করিনি।’
রাজ্জার তাঁর অভিনয় জীবনে জুটি বেঁধেছেন সুচন্দা, কবরী, শাবানা, ববিতার মতো তারকাদের সঙ্গে। বিনোদন অঙ্গনে আসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি একুশে পদক,স্বাধীনতা পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার সহ অসংখ্য সম্মাননা পেয়েছেন।
বাংলা-উর্দু মিলিয়ে প্রায় চারশর মতো চলচ্চিত্রে অভিনয় করা বহু গুণে গুণান্বিত এই নায়ক ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে পাড়ি জমান না-ফেরার দেশে। আজ তার অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী।
এসএন/রুপা
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: