শুক্রবার, ৩০শে মে ২০২৫, ১৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


গাজায় যুদ্ধাপরাধ হচ্ছে : ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী


প্রকাশিত:
২৮ মে ২০২৫ ২০:১৬

আপডেট:
৩০ মে ২০২৫ ০৪:৩৯

ছবি সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধাপরাধ ঘটছে বলে মনে করেন ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ত; আর এজন্য বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার নেতৃত্বাধীন সরকারকে লক্ষ্য করে তীব্র ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন তিনি।

এহুদ ওলমার্ত ২০০৬ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। সম্প্রতি মার্কিন সম্প্রচার সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। সেখানে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “গাজায় গত ১১ সপ্তাহ ধরে খাদ্য বা ত্রাণসামগ্রী প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এটা যদি যুদ্ধাপরাধ না হয়, তাহলে যুদ্ধাপরাধ কী? আপনি একে যুদ্ধাপরাধ ব্যতীত অন্য কোনো শব্দ দিয়ে কোনোভাবেই ব্যাখ্যা বা চিহ্নিত করতে পারবেন না।”

প্রসঙ্গত, গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের অতর্কিত হামলার জবাবে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে যখন গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী— সে সময় ইসরায়েলের বাইরে এই অভিযানের পক্ষে জনমত গঠনে ভূমিকা রেখেছিলেন ওলমার্ত। এমনকি হামাস নিধনের নামে ইসরায়েলি বাহিনী যখন নির্বিচারে গাজার নারী, শিশু ও বেসামরিকদের হত্যা করছিল, তখনও একাধিকবার ওলমার্ত বলেছেন যে এসব হত্যাকাণ্ড ইসরায়েলি বাহিনীর ইচ্ছাকৃত নয়।

তবে ১৯ মাস ধরে যুদ্ধ চলার পর এখন ইসরায়েলের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী মনে করেন যে গাজায় আইডিএফের সামরিক অভিযানের মেয়াদ হওয়া উচিত ছিল সর্বোচ্চ এক বছর। আরও মনে করেন, গাজায় অভিযানের পক্ষে আর কোনো কথা বলা তার উচিত নয়।

“আমরা এখন গাজায় যা করছি তাকে এক কথায় ধ্বংসযজ্ঞ বলা যায়; অর্থাৎ বেসামরিক লোকজনদের প্রতি সীমাহীন নিষ্ঠুরতা এবং নির্বিচারে তাদেরকে হত্যা— যা পুরোপুরি অন্যায্য এবং ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্য কোনো দিক থেকেই সহায়ক নয়।”

এই সরকারকে দ্রুত বিদায় করতে ইসরায়েলের জনগণকে জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়ে ওলমার্ত বলেন, “আমার বিশ্বাস, ইসরায়েলের অধিকাংশ নাগরিক বর্তমান সরকার, তাদের নীতি ও পদক্ষেপ নিয়ে ক্লান্ত এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। এই সরকার ইসরায়েল এবং তার জনগণের নৈতিক মূল্যবোধের মানদণ্ডকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ইসরায়েলের জনগণের উচিত এই সরকারকে বিদায় করা।”

’২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।

হামাসের হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ১৯ বেশি সময় ধরে চলমান ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত ও আহত হয়েছেন যথাক্রমে ৫৩ হাজার ৯৭৭ জন এবং ১ লাখ ২২ হাজার ৯৬৬ জন। নিহত ও আহতদের ৫৬ শতাংশই নিরপরাধ নারী ও শিশু।

যে ২৫১ জন জিম্মিকে হামাসের যোদ্ধারা ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে এখনও অন্তত ৩৫ জন জীবিত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সামরিক অভিযানের মাধ্যমে তাদের উদ্ধার করার ঘোষণা দিয়েছে আইডিএফ।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানিয়েছে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘের আদালত নামে পরিচিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

তবে নেতানিয়াহু স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর করা এবং জিম্মিদের মুক্ত করা এই অভিযানের লক্ষ্য এবং লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে গাজায়।

সূত্র : সিএনএন


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top