৪ ঘণ্টার লড়াইয়ে আলাদা হলো জমজ, রিকশাচালকের দুই কন্যা পেল নতুন জীবন
প্রকাশিত:
২১ আগস্ট ২০২৫ ১৮:৪৩
আপডেট:
২১ আগস্ট ২০২৫ ২১:৩৪

নীলফামারীর জলঢাকায় জন্মগতভাবে জোড়া লাগা জমজ শিশু জুহি ও রুহিকে সফলভাবে আলাদা করতে সক্ষম হয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
শিশু সার্জারি বিভাগের (ইউনিট-২) অধ্যাপক ডা. কানিজ হাসিনার (শিউলি) নেতৃত্বে পরিচালিত এ অস্ত্রোপচারে অংশ নেন হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকরা।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেন শিশু সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. কানিজ হাসিনা (শিউলি)।
তিনি জানান, জোড়া লাগানো দুই শিশু রুহি ও জুহি গত ১৩ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হয়। যেহেতু তারা ছোট ছিল তাই তাদের অবজারভেশনে রেখে মেডিকেলে বোর্ড গঠন করার পর ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয় তাদের। গত ২৪ জুন তাদের চার ঘন্টার সফল অস্ত্রোপচার করে পৃথক করা হয়। এই জটিল সার্জারিতে অংশ নেন– শিশু সার্জারি ছাড়াও প্লাস্টিক সার্জারি, পেডিয়াট্রিক সার্জারি, নিওনেটোলোজি, রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং, অর্থোপেডিক, নবজাতক বিভাগ, নিউরো সার্জারি ও অ্যানেস্থেসিওলোজি বিভাগের চিকিৎসকরা।
তিনি আরও জানান, অস্ত্রোপচারের পর দুই শিশুকে হাসপাতালের পোস্ট অপারেটিভ ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) রাখা হয়। দীর্ঘ সময় ধরে নিবিড় পর্যবেক্ষণ, বিশেষায়িত চিকিৎসা ও সেবার পর বর্তমানে তারা সুস্থ আছেন। তাদের খাওয়া-দাওয়া, পায়খানা, পস্রাব করতে কোন সমস্যা হচ্ছে না।
অপারেশনের আগেও তাদের পস্রাব-পায়খানা এবং খাওয়া-দাওয়ার কোনো সমস্যা হতো না। হাসপাতালে সম্পূর্ণ ফ্রিতে তাদের রাখা হয়। সুস্থ অবস্থায় আজ তাদের ছুটি দেওয়া হয়েছে।
ডা. কানিজ হাসিনা আরও বলেন, এটি ছিল দীর্ঘ ও জটিল একটি অস্ত্রোপচার। প্রতি মুহূর্তে জুহি ও রুহির সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নীলফামারীর রিকশাচালক বাবা ও গৃহিণী মায়ের দ্বিতীয় সন্তান জুহি ও রুহিকে দীর্ঘ সময় হাসপাতালে থাকতে হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসাসামগ্রীর সহায়তা দিয়েছে। এই সফলতার জন্য পুরো চিকিৎসক টিম, নার্স ও হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
জমজ শিশু জহির ও রুহির মা শিরিনা বেগম জানান, আমাদের ১০ বছরের একটি ছেলে সন্তান আছে। বর্তমানে জুহি ও রুহির বয়স ৭ মাস ২৩ দিন চলে। জন্মের পরেই তাদের দু’জনের শরীর জোড়া লাগানো ছিল। ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসার পর দীর্ঘ পাঁচ-ছয় মাস চিকিৎসা শেষে গত জুন মাসে তাদের অপারেশন করে আলাদা করা হয়। দুই মেয়ে এখন ভালো আছে চিকিৎসকরা আজ আমাদের ছেড়ে দিয়েছেন। আমি চিকিৎসক এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই।
এসএন /সীমা
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: